Indian Post

ডাকঘরে পিপিএফ খোলার সুবিধা এখন বাড়িতে বসেই

সাম্প্রতিক কালে ডাকঘরের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ না-থাকা ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের আধার নম্বরের ভিত্তিতে ঘরে বসে টাকা তোলার সুযোগও এনে দিয়েছে তারা।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি

করোনা সংক্রমণ রুখতে মার্চের শেষ দিক থেকে দীর্ঘ লকডাউনের সময় প্রবীণ পেনশনভোগীদের একাংশের বাড়িতে পেনশনের টাকা পৌঁছে দিয়েছিল ডাক বিভাগের ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল (পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আন্দামান ও নিকোবর)। সাম্প্রতিক কালে ডাকঘরের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ না-থাকা ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের আধার নম্বরের ভিত্তিতে ঘরে বসে টাকা তোলার সুযোগও এনে দিয়েছে তারা। এ বারের পরিকল্পনা আগ্রহীদের বাড়িতে গিয়ে ডাকঘরে পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া। লক্ষ্য, করোনাকালে চিঠি ও পার্সেল বিলির ক্ষেত্রে তলানিতে ঠেকা আয় আরও বেশি পিপিএফ করিয়ে কিছুটা বাড়িয়ে নেওয়ার রাস্তা তৈরি।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, প্রতিযোগিতার বাজারে নতুন গ্রাহক টানতে বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মীদের আকছার সাধারণ মানুষের দরজায় হাজির হতে দেখা যায়। এ ভাবে গ্রাহককে নির্ঝঞ্ঝাট সঞ্চয়ের বার্তা দেওয়া আসলে ব্যাঙ্কগুলির ব্যবসা বাড়ানোর পন্থা। সেই পথেই হাঁটার নতুন বিপণন কৌশল নিয়েছে ডাক বিভাগের এই সার্কলও।

চিঠি বণ্টন ছাড়াও কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলি দেখাশোনা করে কেন্দ্রের থেকে কমিশন বাবদ আয় করে ডাক বিভাগ। এ বার সেই কমিশনেই আরও বেশি করে ভরসা করতে চাইছে ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল। এখানকার চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল মার্ভিন আলেকজ়ান্ডার জানান, করোনার জন্য অনেকে ডাকঘরে আসতে আগ্রহী নন। সে কথা মাথায় রেখে পোস্টম্যানেরা বিভিন্ন এলাকায় বা অফিস পাড়ায় অন্যতম জনপ্রিয় স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প পিপিএফ খোলার প্রচার চালাবেন। আগ্রহীরা তাঁদের থেকেই আবেদনপত্র ও টাকা জমা দেওয়ার ‘স্লিপ’ নিয়ে তা পূরণ করে আবার তাঁদের কাছেই জমা দিতে পারবেন। এ জন্য পোস্টম্যানদের ন্যূনতম একটা উৎসাহ ভাতা দেবে ডাক বিভাগ।

Advertisement

ডাক বিভাগের পরিকল্পনা

পোস্টম্যান চিঠি বিলির সময় আগ্রহীদের কাছে পিপিএফের আবেদনপত্র পৌঁছবেন।
গ্রাহকের পূরণ করা আবেদনপত্র ও
প্রাথমিক কিস্তির অর্থ (নগদে বা চেকে) পোস্টম্যানই জমা দেবেন ডাকঘরে।
নগদে টাকা দেওয়ার ঊর্ধ্বসীমা থাকবে।
অ্যাকাউন্ট খোলার পরে পাসবুকও ঘরে বসেই পাবেন গ্রাহক।
পরিষেবা শুরু হচ্ছে রাজ্যে শহরাঞ্চলের ডাকঘরগুলিতে। ধাপে ধাপে ছড়ানোর ভাবনা।
লক্ষ্য, পিপিএফ অ্যাকাউন্টের সংখ্যা অনেকখানি বাড়ানো। এখন ১.৫২ লক্ষ (গত মার্চ পর্যন্ত ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কলে)।

মার্ভিন জানান, এ বার স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প থেকে তাঁদের আয়ের লক্ষ্য ৯০৫ কোটি টাকা। তার মধ্যে পিপিএফে বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। ডাকঘরে প্রকল্পটিকে আরও জনপ্রিয় করতে সেটিকে ‘ভবিষ্য সুরক্ষা যোজনা’ বলে নতুন নামও দিয়েছেন তাঁরা।

কেন পিপিএফে জোর

চিঠি ও পার্সেল বণ্টনে ডাক বিভাগের আয় কমেছে।


পিপিএফ অ্যাকাউন্ট দীর্ঘমেয়াদি।

কেন্দ্রের থেকে দীর্ঘ দিন ধরে কমিশন পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে।


দীর্ঘ সম্পর্কের জেরে গ্রাহক অন্য পরিষেবা নিতেও আগ্রহী হলে, আয় আরও বাড়বে ডাকঘরের।

ডাক বিভাগ সূত্রের খবর, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি বিভিন্ন দফতর, রেল ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির কর্মীদের পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলায় উৎসাহ দিতে একাধিক নোডাল অফিসার নিয়োগ করেছে এই সার্কল। সাধারণ মানুষের মধ্যেও সেই প্রচার চালাবেন পোস্টম্যানেরা। নতুন ৫০ হাজার অ্যাকাউন্ট খোলার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে নতুন ২৪ হাজার অ্যাকাউন্ট খুলেছিল তারা। যা গত বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশেরও বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement