—প্রতীকী ছবি।
পণ্যের মূল্য এবং বন্ডের ইল্ড বৃদ্ধির আতঙ্ক আবার গ্রাস করেছে গোটা বিশ্বের শেয়ার বাজারকে। আমেরিকায় বৃহস্পতিবার বন্ডের দাম আরও নামে। ফলে গত সপ্তাহের প্রথম দিকে ইল্ড একটু কমলেও, পরে আবার বেড়েছে। যার ধাক্কায় ভারতেও ১০ বছর মেয়াদি বন্ড ইল্ড শুক্রবার উঠে যায় ৬.২৩ শতাংশে। তার উপরে তামা, ইস্পাত, তেল-সহ বিভিন্ন পণ্যের দামও মাথাচাড়া দিচ্ছে। এ সবের জেরে বাজারে সুদ বাড়ার সম্ভাবনা বহাল আছে। তারই প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারে। বন্ডের মতো সুদ নির্ভর প্রকল্পের দিকে ছুটেছেন বহু লগ্নিকারী। মঙ্গল, বুধবার যথাক্রমে ৪৪৭ এবং ১১৪৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি দেখা সেনসেক্স বৃহস্পতি, শুক্রবার নেমেছে যথাক্রমে ৫৯৯ ও ৪৪১। যদিও সূচক এখনও ৫০ হাজারের উপরে (৫০,৪০৫)।
সব দেশেই লগ্নিকারীদের আশা, বন্ড ইল্ড নিয়ন্ত্রণে রাখতে পদক্ষেপ করবে আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজ়ার্ভ। বিশ্ব বাজারের স্থিতিশীলতার দিকে চোখ ভারতের লগ্নিকারীদেরও। যা গত সপ্তাহ জুড়ে অস্থির ছিল। আসলে বিশ্ব বাজার স্থিতিশীল না-হলে ভারতেও শেয়ার সূচক অস্থির থাকবে। সুদের আয়ের টানে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি শেয়ার বেচে বেরিয়ে যেতে থাকলে অবস্থা হতে পারে আরও সঙ্গীন। তবে আগামী অর্থবর্ষে যেহেতু ভারতীয় অর্থনীতি অনেকটাই ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা, তাই সূচকের প্রতিটি পতনকে লগ্নির সুযোগ হিসেবে দেখলে লাভ হবে বলেই মনে হয়।
এই অবস্থায় সরকারের আয় বাড়ছে। ফেব্রুয়ারিতে জিএসটি খাতে আদায় হয়েছে ১.১৩ লক্ষ কোটি টাকা। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৭% বেশি। জানুয়ারির ১.১৯ লক্ষ কোটি টাকার তুলনায় তা কম হলেও, মনে রাখতে হবে ফেব্রুয়ারি ছিল ২৮ দিনের মাস। স্পেকট্রাম নিলাম করে রোজগার হবে ৭৭,৮১৪ কোটি টাকা। পেট্রল, ডিজেল এবং রান্নার গ্যাসের চড়া শুল্ক থেকেও মোটা অঙ্কের তহবিল তুলছে কেন্দ্র।
যাঁরা নতুন ফ্ল্যাট বা বাড়ি কিনবেন ভাবছেন, তাঁরা এখন মাঠে নামতে পারেন। আচমকাই গৃহঋণে সুদ কমানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে ব্যাঙ্ক এবং গৃহঋণ সংস্থাগুলি। স্টেট ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক-সহ অনেকেই আছে তালিকায়। কোটাক মহীন্দ্রা ব্যাঙ্ক সুদ নামিয়েছে ৬.৬৫ শতাংশে। স্টেট ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে তা ৬.৭০%। আশা, সুদের হারে ছাঁটাই আবাসনের চাহিদা বাড়াবে।
চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে আর মাত্র ২৩ দিন। অর্থ এবং কর সংক্রান্ত কাজগুলি সারতে হবে এর মধ্যেই। চলতি অর্থবর্ষে নতুন কর ব্যবস্থা চালু হয়েছে। যেখানে করের হার কমলেও, বেশিরভাগ করছাড় মিলবে না। পুরনো ব্যবস্থাটিও রয়েছে। কোনটি বেশি লাভজনক হিসেব কষে বেছে নিতে হবে দ্রুত। কর সাশ্রয়কারী প্রকল্পে লগ্নির কাজও চটজলদি সারতে হবে, যদি পুরনো হারের কর ব্যবস্থাতেই রয়ে যেতে চান।
(মতামত ব্যক্তিগত)