প্রতীকী ছবি।
গত বছরে অর্থনীতিকে কম সমস্যার মুখে পড়তে হয়নি। বৃদ্ধি, কেনাকাটা, কর সংগ্রহ-সহ অর্থনীতির বিভিন্ন মাপকাঠি ধাক্কা খেয়েছে। বছরের শেষ দিনে জানা গিয়েছে, নভেম্বরে পরিকাঠামো শিল্প সঙ্কুচিত হয়েছে ১.৫%। উৎপাদন কমেছে কয়লা, অশোধিত তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, ইস্পাত, বিদ্যুতের। একই দিনে জানা যায়, নভেম্বরে রাজকোষ ঘাটতিও পৌঁছেছে ৮.০৭ লক্ষ কোটি টাকায়, যা গোটা অর্থবর্ষের লক্ষ্যমাত্রার (৭.০৩ লক্ষ কোটি টাকা) ১১৪.৮%।
নতুন বছরের গোড়ায় বিদেশ থেকে এসেছে আশঙ্কার বার্তা। আকাশপথে মার্কিন হামলায় ইরানের এক সেনাকর্তার মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে পশ্চিম এশিয়া-সহ সারা বিশ্বে। ফলে বেড়েছে তেলের দাম। গত কয়েক দিন দেশেও পেট্রল-ডিজেলের দর বাড়ছে লাফিয়ে। ডলারের সাপেক্ষে দুর্বল হচ্ছে টাকা। ভারতীয় অর্থনীতির কাছে তেল এবং ডলারের এই মূল্যবৃদ্ধি তাৎপর্যপূর্ণ। ব্যারেল প্রতি তেলের দাম ১ ডলার বাড়লে ভারতের আমদানি বিল বাড়ে ৩০২৯ কোটি টাকা। অন্য দিকে, ২৪৭৩ কোটি টাকা বাড়ে ডলারের দাম ১ টাকা বাড়লে। অর্থাৎ, তেল ও ডলার উভয়েই ঊর্ধ্বমুখী হলে তা ভারতীয় অর্থনীতির কাছে আশঙ্কার কারণ। ফলে এখন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ঘরে-বাইরে সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে ভারতকে।
একটা ব্যাপার অবশ্য ইতিবাচক। ইদানীং দেখা যাচ্ছে, দেশীয় অর্থনীতি সংক্রান্ত খারাপ খবর শেয়ার বাজারকে তেমন কাবু করতে পারছে না। বছরের শেষ দিনে সেনসেক্স ৩০৪ পয়েন্ট নামলেও, নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনেই আবার সূচক বেড়েছিল ৩২১ পয়েন্ট। নিফ্টিও পা রেখেছিল সর্বকালীন উচ্চতায়। আবার আমেরিকা-ইরান সমস্যার পরে সূচক পড়েছে। একই কারণে অবশ্য সোনার দামও বেড়েছে। শনিবার ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট সোনার দর দাঁড়ায় ৪০,৬৫০ টাকা।
বছরের শেষ দিনে একটি ভাল খবর পেয়েছেন সুদ নির্ভর মানুষেরা। নতুন বছরের প্রথম তিন মাসে সুদ কমছে না বিভিন্ন ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পে। আবার নভেম্বরের তুলনায় সামান্য কমলেও ডিসেম্বরে জিএসটি সংগ্রহ ছাড়িয়েছে ১ লক্ষ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের প্রথম ন’মাসে এই নিয়ে পাঁচ বার এই খাতে সংগ্রহ ছাড়াল লক্ষ কোটি। নতুন বছরে সস্তা হচ্ছে গৃহঋণও। সুদ কমিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক এবং এইচডিএফসি লিমিটেড।
(মতামত ব্যক্তিগত)