Indian Economy

২০২০-র শেষেই মন্দা পিছনে ফেলে এসেছে অর্থনীতি, ইঙ্গিত প্রায় সব সূচকে

মার্কিট ইন্ডিয়া সার্ভিসেসের ‘পার্চেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স’ বা পিএমআই গত মাসের ৫২.৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫২.৮ শতাংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১২:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

কোভিডের কারণে ২০২০ সালের শেষ ত্রৈমাসিকেই আর্থিক ‘মন্দা’ পিছনে ফেলে এসেছে ভারত। উৎপাদন, পরিকাঠামো, পরিষেবা, রফতানি থেকে সব সূচকে ধারাবাহিক বৃদ্ধির তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে। অর্থনীতিবিদরাও একমত, আর পিছনে তাকানোর প্রশ্ন নেই। আর্থিক গতি বৃদ্ধির মতো সামগ্রিক পরিস্থিতি পুরোপুরি প্রস্তুত। দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি-র হারও বাড়ছে আশানুরূপ হারে।

Advertisement

কোভিড সংক্রমণের আগে থেকেই দেশের অর্থনীতিতে চলছিল ঝিমুনি। গত বছরের মার্চে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণার পর থেকে নামতে নামতে খাদের কিনারায় পৌঁছে যায় অর্থনীতি। লকডাউন শিথিল করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালুর সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে অর্থনীতিতেও গতি আসতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালের শেষ ত্রৈমাসিকে ইঙ্গিত মেলে ঘুরে দাঁড়ানোর। ব্লুমবার্গের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ৮টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের সূচকের মধ্যে দু’টি বেড়েছে, ৫টি স্থিতিশীল, একটি সূচক সামান্য নিম্নমুখী। শেষ ৩ মাসের গড় বৃদ্ধি ৫-এর কাছাকাছি। অর্থনীতিবিদদের মতে, উত্থান-পতনের অস্থিরতা কাটিয়ে স্থিতিশীলতা ফিরেছে অর্থনীতিতে, যা স্থায়ী বৃদ্ধির স্পষ্ট ইঙ্গিত।

ব্লুমবার্গের সমীক্ষা বলছে, জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ৪ মাস বেড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড। মার্কেট ইন্ডিয়া সার্ভিসেসের পার্চেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স বা পিএমআই গত মাসের ৫২.৩ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫২.৮ শতাংশ। এই সূচক ৫০ শতাংশের উপরে থাকলেই ধনাত্মক বৃদ্ধি হিসেবে ধরা হয়। কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে গতি এসেছে উৎপাদন ক্ষেত্রেও। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এক দিকে যেমন বিভিন্ন সংস্থার উৎপাদন বেড়েছে, তেমনই এই ক্ষেত্রে বেড়েছে বিনিয়োগও। মূদ্রাস্ফিতিও রয়েছে নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই। ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে বেড়েছে রফতানি। বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রী, গ্রহ-রত্ন ও গহনা, লৌহ আকরিক এবং বস্ত্র ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে রফতানি।

Advertisement

করোনা সংক্রমণের আগে অর্থনীতির ঝিমুনি প্রথম প্রকট হয়েছিল গাড়ি উৎপাদন ও বিক্রিতে। তবে গত বছরের শেষ ত্রৈমাসিকেই গাড়ি শিল্পে ঘুড়ে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত মিলেছিল। বিশেষ করে বাইকের বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় নতুন বছরের প্রথম মাসে পরিবহণ ক্ষেত্রের সূচক বেড়েছে ১১.৪ শতাংশ। ঋণ ক্ষেত্রেও এসেছে গতি। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় ঋণের হার বেড়েছে ৬.৫ শতাংশ।

ডিসেম্বরে শিল্প উৎপাদনের সূচক ১ শতাংশ বেড়েছে গত বছরের ওই সময়ের তুলনায়। মূলধনী পণ্যের উৎপাদনে বৃদ্ধি ০.৬ শতাংশ। অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকে পরিকাঠামো পণ্যের উৎপাদন সূচকেও আকর্ষণীয় বৃদ্ধি। তবে একমাত্র পরিকাঠামো শিল্পে কিছুটা সঙ্কোচন হয়েছে। এক বছর আগের ডিসেম্বরের তুলনায় এই সূচক নেমেছে ১.৩ শতাংশ।

অর্থনীতিবদদের মতে, মন্দা কাটিয়ে উঠে মোটের উপর দৃঢ় ভিতের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে অর্থনীতি। এই সব সূচকে বৃদ্ধির প্রভাব দেশের মোট অভ্যন্ততরীণ উৎপাদনেও খুব শীঘ্রই প্রতিফলিত হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement