ফাইল চিত্র।
জ্বালানির খরচে দিশেহারা মানুষ। নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধিতে বিপর্যস্ত। লাগাতার দাম পড়ছে টাকার। তার উপরে চড়া বেকারত্ব। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে সারা দেশে তার হার ছিল ৭.১৪%। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিকস গোষ্ঠীর (ব্রাজ়িল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা) ব্যবসায়িক সম্মেলনের উদ্বোধনে তাঁর সরকারের সংস্কারের সুফল কী ভাবে ভারতের অর্থনীতির অগ্রগতিতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, সেই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই ভার্চুয়াল সভা থেকে জানালেন, চলতি বছরে ৭.৫% আর্থিক বৃদ্ধির আশা করছেন তাঁরা। আর সেটা হলে, ভারতই হবে বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি।
সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য বক্তব্য, এক সময় বছরে দু’কোটি চাকরির স্বপ্ন ফেরি করে মসনদে বসেছিলেন মোদী। সেই স্বপ্ন পূরণ দূর অস্ত্, ক্রমশ মাথা তুলেছে বেকারত্ব। বর্তমানে চড়া মূল্যবৃদ্ধির আবহে তাঁর আর্থিক বৃদ্ধির স্বপ্নেরও দফারফা হবে না তো? মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা যে অর্থনীতির পক্ষে আশঙ্কাজনক, এ দিন তা ফের স্পষ্ট হয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক প্রকাশিত ঋণনীতি কমিটির বৈঠকের কার্য বিবরণীতে। এ মাসের ৬-৮ তারিখে বৈঠক হয়। বাড়ানো হয় সুদের হার। কার্য বিবরণীতে দেখা গিয়েছে, আলোচনার সময় আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস মন্তব্য করেছেন, ভারতের আর্থিক হাল ফিরছে ঠিকই। কিন্তু লাগাতার চড়তে থাকা মূল্যবৃদ্ধি উদ্বেগের বিষয়।
বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ঋণনীতি কমিটির সমস্ত সদস্য। এই যুক্তিতে সুদের হার আরও বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা স্বীকারও করেন। রেপো রেট (যে সুদে ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয় আরবিআই) ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধির পক্ষে ভোট দেন শক্তিকান্ত। সমর্থন করেন বাকিরা। ডেপুটি গভর্নর মাইকেল দেবব্রত পাত্রের যুক্তি ছিল, মূল্যবৃদ্ধির হারে রাশ টানা না গেলে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর জমিটাই নষ্ট হতে পারে। তখন পিছোবে বহু লগ্নির সিদ্ধান্তও। যা আর্থিক বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরানোর অন্যতম শর্ত।
মোদী অবশ্য বলেন, সম্ভাবনাময় নতুন ভারতের প্রতিটি ক্ষেত্র বদলাচ্ছে। পরিকাঠামোয় ১.৫ লক্ষ কোটি ডলার লগ্নির সুযোগ তৈরি হয়েছে। অর্থনীতি ছন্দে ফিরছে প্রযুক্তি-চালিত আর্থিক বৃদ্ধি এবং সরকারের উদ্ভাবনে উৎসাহ দেওয়ার নীতির হাত ধরেই।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।