প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
গ্রাম।গরিব। প্রান্তজন।
খরচ হোক না হোক, পরের বছর লোকসভা ভোটের আগে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি মোদী সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে ‘রাজনৈতিক বার্তা’ হিসেবে বার বার গ্রাম, গরিব ও প্রান্তিক মানুষের কথা উঠে আসবে।
চলতি সপ্তাহেই বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, লোকসভা ভোটের আর মাত্র ৪০০ দিন বাকি। সমাজের সকলের কাছে, বিশেষত প্রান্তিক মানুষের দরজায় যেতে হবে। পৌঁছে দিতে হবে মোদী সরকারের উন্নয়নের বার্তা। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, আর মাত্র দিন দশেক পরে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সংসদে আগামী অর্থবর্ষের যে বাজেট পেশ করবেন, তা-ও এই ‘রাজনৈতিক বার্তা’-রই অঙ্গ। সেখানে গ্রামের উন্নয়ন, সেখানকার পরিকাঠামোকে পোক্ত করে তোলার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বাজেট বক্তৃতার প্রতিটি অধ্যায়ে, এমনকি ছত্রে ছত্রে উঠে আসবে রাজনৈতিক বার্তা। তাতে সব থেকে বেশি করে থাকবে গ্রাম, গরিব এবং প্রান্তজনের কথা। লোকসভা ভোটের আগে কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থানের মতো যে সব রাজ্যে বিজেপিকে কঠিন পরীক্ষাদিতে হবে, সেখানকার ভোট-ব্যাঙ্ককেও পাখির চোখ করা হবে।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, কোভিড-লকডাউনের ফলে গ্রামের মানুষের রোজগার কমে যাওয়া, জিনিসপত্রের চড়া দাম এবং ডিজ়েলের মতো চাষিদের প্রয়োজনীয় জ্বালানি কেনার খরচ বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে গ্রামীণ অর্থনীতিতে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, তাতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে আসন্ন বাজেটে। সূত্রটির বক্তব্য, অতিমারির সময়ে শহর থেকে কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরেছিলেন যাঁরা, তাঁদের সকলে আর আগের মতো রুটিরুজি ফিরে পাননি। বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী, গ্রামে বেকারত্বের হার যথেষ্ট চড়া। ফলে চলতি বছরেও একশো দিনের কাজের জন্য বড় অঙ্কের বরাদ্দ করতে হবে মোদী সরকারকে। তার উপরে গ্রামের পরিকাঠামো তৈরিতে খরচ কমালে চলবে না। কারণ এই খরচের হাত ধরে সেখানে কাজের সুযোগ তৈরি হয়।
সরকারি মহল বলছে, তা বলে জনমোহিনী বাজেট করতে গিয়ে বিপুল পরিমাণে খরচ বাড়ানোর পক্ষে নয় অর্থ মন্ত্রক। সীতারামন ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি চলতি অর্থবর্ষের রাজকোষ ঘাটতি ৬.৪ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখতে চান। সেই সঙ্গে তা আরও কমিয়ে আনতে চান পরের আর্থিক বছরে। স্বাভাবিক ভাবেই খয়রাতি করার অর্থ তাঁর কাছে কম। তাই একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা, গ্রাম সড়ক যোজনা, পিএম-কিসান থেকে শুরু করে গরিবদের জন্য বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের সংযোগের মতো যে সব প্রকল্প বর্তমানে চালু রয়েছে, সেগুলিতে প্রয়োজন মতো টাকা বরাদ্দ করা হবে। প্রকল্পগুলির প্রচার করা হবে এ বারের বাজেটের মাধ্যমেই।