Gross Domestic Product

পড়ছে ভারত! মাথা পিছু উৎপাদনে ‘অচ্ছে দিন’ যাচ্ছে বাংলাদেশে

আইএমএফ-এর আশা, ২০২১ সালেই অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি বেশ খানিকটা মেরামত করে ফেলবে ভারত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ১৮:২৭
Share:

চলতি বছরে ভারতের মাথা পিছু জাতীয় গড় উৎপাদন ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা আইএমএফ-এর।

করোনার ধাক্কায় টলমল অর্থনীতি। কিন্তু যা আশঙ্কা করা হচ্ছে তার থেকেও খারাপ হতে পারে ভারতের পরিস্থিতি। চলতি বছরে এ দেশের মাথা পিছু জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) বাংলাদেশেরও নীচে চলে যেতে পারে। এমনটাই মনে করছে ইন্টারশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ)। এমনকি জিডিপির হার ১০.৩ শতাংশ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আইএমএফ-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে অশনি সঙ্কেত দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।

Advertisement

মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে আইএমএফ-এর ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ (ডব্লিউইও)। তাতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবর্ষে (যা ২০২১ সালের মার্চে শেষ হচ্ছে) ভারতের মাথা পিছু জাতীয় উৎপাদন দাঁড়াবে ১ হাজার ৮৭৭ ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকার কিছু বেশি। সেখানে বাংলাদেশের মাথা পিছু জাতীয় উৎপাদন হবে ১ হাজার ৮৮৮ ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা। ডব্লিউইও আশঙ্কা করছে, গত ৪ বছরে এটাই রেকর্ড পতন হতে চলেছে।

গত জুন মাসেই আইএমএফ জানিয়েছিল, ভারতের জিডিপি ৪.৫ শতাংশ কমতে পারে। তার মাস চারেকের মাথায় আন্তর্জাতিক ওই সংস্থার রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, চলতি বছরে জিডিপির হারে ভয়াবহ পতন ঘটতে পারে। অর্থনীতির এই মুখ থুবড়ে পড়ার কারণ কী? এর কারণ হিসাবে করোনা এবং তার জেরে টানা লকডাউনকেই চিহ্নিত করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তার জেরে অর্থনীতির স্বাভাবিক চলন যে জোর ধাক্কা খেয়েছে তা মানছেন সকলেই।

Advertisement

আরও পড়ুন: ভেসে যাচ্ছে মানুষ, ভাসছে গাড়ি, বৃষ্টিতে ভয়াল অবস্থা হায়দরাবাদের

ডব্লিউইও-র মতে, অতিমারির জেরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে শ্রীলঙ্কার পর সবচেয়ে বেশি ধাক্কার মুখে পড়বে ভারত। তার তুলনায় খানিকটা এগিয়ে থাকবে নেপাল এবং ভুটানের মতো ছোট দেশগুলির অর্থনীতি। তবে ভারতের প্রতিবেশী পাকিস্তানের অর্থনীতি চলতি বছরে কোন অবস্থায় থাকবে তা নিয়ে অবশ্য কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি ডব্লিউইও।

আরও পড়ুন: ‘ব্যস্ত’ অমিত শাহ, শিলিগুড়ি সফর বাতিল, ১৯ তারিখ আসছেন নড্ডা

আইএমএফ-এর আশা, ২০২১ সালেই অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি বেশ খানিকটা মেরামত করে ফেলবে দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারত। তাদের মতে, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি হতে চলেছে ৮.৮ শতাংশ। একই সঙ্গে গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক চিত্রটাও পরিসংখ্যানের মাধ্যমে তুলে ধরেছে আইএমএফ। তাদের মতে, চলতি বছরে সারা বিশ্বে আর্থিক বৃদ্ধি সঙ্কুচিত হবে। তবে আগামী বছরে বৃদ্ধির গতি খানিকটা বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ভারতের অর্থনৈতিক চালচিত্র নিয়ে আইএমএফের এই ভবিষ্যদ্বাণী আরও খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ দীপঙ্কর দাশগুপ্ত। তাঁর মতে, ‘‘বাংলাদেশের জনসংখ্যা আমাদের থেকে অনেক কম। ফলে মাথা পিছু জাতীয় উৎপাদনের বিষয়টি ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘অর্থনীতিতে আমরা অনেকটা নীচে নেমে গিয়েছি। সেখান থেকে আগামী বছরে কতটা উত্থান হবে তাই হবে বিচার্য বিষয়।’’

আইএমএফ-এর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন রাহুল গাঁধী। কটাক্ষের সুরে তাঁর টুইট, ‘গত ৬ বছরে বিজেপির বিদ্বেষমূলক জাতীয়তাবাদী সংস্কৃতির দুর্দান্ত সাফল্য হল, বাংলাদেশ ভারতকে ছাপিয়ে যেতে চলেছে।’

কড়া সমালোচনা করতে ছাড়েননি তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর টুইট, ‘ভারতের অর্থনীতি ক্ষয়িষ্ণু। এমনকি বাংলাদেশও মাথা পিছু জাতীয় উৎপাদনে আমাদের ছাপিয়ে যেতে চলেছে। মন দিয়ে শুনুন, এটা ওদের উত্তরণ নয়, আমাদের মহাপতন। এটাই নরেন্দ্র মোদীজির ৫ লক্ষ কোটির অর্থনীতির স্বপ্ন!’

তবে আইএমএফের সাম্প্রতিক রিপোর্ট নিয়ে মোদী সরকারের অন্দরের ব্যাখ্যা হল, ক্রয় ক্ষমতার নিরিখে ২০১৯ সালে ভারতের মাথা পিছু জাতীয় উৎপাদন বাংলাদেশের থেকে ১১ গুণ বেশি ছিল। ভারতের জনসংখ্যা বাংলাদেশের ৮ গুণ, সমালোচনার জবাব হিসাবে সেই যুক্তিও তুলে ধরা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement