বেহাল কর্মসংস্থান। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণের পরের দিনই দেশের কর্মসংস্থানের বেহাল ছবি সামনে আনল পরিসংখ্যান মন্ত্রক। সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হল ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে দেশের বেকারত্বের হার ছিল ৬.১ শতাংশ। ১৯৭৪ সালের পর দেশের কর্মসংস্থানের হাল কখনও এত খারাপ হয়নি। যদিও পরিসংখ্যান মন্ত্রকের দাবি, সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতিতে কর্মসংস্থানের হার নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই আগের হিসেবের সঙ্গে বেকারত্বের এই হারের তুলনা করা ঠিক নয়।
নির্বাচনের আগেই গত জানুয়ারিতে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় ফাঁস হয়ে গিয়েছিল দেশের বেকারত্বের এই হতাশাব্যঞ্জক চিত্র। সেই রিপোর্টকে তখন খসড়া বলে সাফাই দিয়েছিল নীতি আয়োগ। পরিসংখ্যান মন্ত্রকের সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে অবশ্য মান্যতা পেল সেই ফাঁস হওয়া রিপোর্টই। দেশের মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রবীণ শ্রীবাস্তব অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘যে পদ্ধতিতে এই কর্মসংস্থানের হার ঠিক করা হয়েছে, তা একেবারে নতুন। তাই আগের সঙ্গে এই রেকর্ড মিলিয়ে দেখা ঠিক নয়।’’
শুধু বেকারত্বই নয়, দেশের অর্থনীতির পরিস্থিতিও খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। মার্চে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিক রিপোর্টে দেশের গড় জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির (জিডিপি) হার গিয়ে দাঁড়াল ৫.৮, যা গত পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন। এর ফলে দ্রুত বাড়তে থাকা অর্থনীতির তালিকায় ভারতকে টপকে শীর্ষে গেল চিন। একই সময়ে চিনের অর্থনীতি বেড়েছে ৬.৪ শতাংশ হারে। ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্র এবং কৃষির হাল বেহাল হওয়াতেই দেশের অর্থনীতির এই দশা বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
আরও পড়ুন: দেশের অর্থনীতিতে আসছে বিগ ব্যাং, বললেন নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান
মার্চে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে দেশের অর্থনীতির হাল অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। রয়টার্সের তৈরি অর্থনীতিবিদদের একটি প্যানেল জানিয়েছিল, এই ত্রৈমাসিকে ভারতের উৎপাদন বাড়বে ৬.৩ শতাংশ হারে। দেশের পরিসংখ্যান মন্ত্রকও জানিয়েছেল, পূর্বনির্ধারিত ৭ নয়, ৬.৮ শতাংশ হারে বাড়বে গড় জাতীয় উৎপাদন। কিন্তু সেই রক্ষণাত্মক পূর্বাভাসের থেকেও অনেকটা কমে গেল দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধির হার।
ডিসেম্বরে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকের থেকেও অনেকটা কমে গিয়েছে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধির হার। সেই ত্রৈমাসিকে ভারতের উৎপাদন বেড়েছিল ৬.৬ শতাংশ হারে। গত পাঁচ বছরে দেশের গড় উৎপাদন বৃদ্ধির হার কখনই এতটা কমে যায়নি। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধির হার আগের বছরের ৭.২ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৬.৮ শতাংশে।