রাজ্যে অর্থ দফতরের স্বাধীন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ফাইল ছবি।
কর্মীদের বেতন, পেনশন, ঋণের সুদ, কন্যাশ্রী-লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো নগদ বিলি প্রকল্প থেকে খেলা-মেলা-উৎসবের মতো রাজস্ব খাতে খরচ বাড়ছে। ফলে রাজস্ব ঘাটতিতে লাগাম পড়ানো যাচ্ছে না। রাজকোষ ঘাটতি কমাতেও ছাঁটাই করতে হয়েছে পরিকাঠামোয় খরচ— পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাম্প্রতিক বাজেট নিয়ে আজ এমনই মূল্যায়ন করল ফিচ গোষ্ঠীর আর্থিক মূল্যায়নকারী সংস্থা ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চ।
সংস্থাটির যুক্তি, চলতি অর্থবর্ষেই রাজ্যের রাজস্ব ব্যয় ৭৯৪৯ কোটি টাকা বেড়েছে। পরিকাঠামো-সহ মূলধনী খাতে ১২,১১৫ কোটি খরচ কমাতে হয়েছে। রাজ্যের আর্থিক শৃঙ্খলার পরিকল্পনা বা ধাপে ধাপে ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যও ‘অবাস্তব’। আগামী তিন বছরে ঘাটতি কমানোর কোনও লক্ষ্য বাজেটে ঘোষণা করা হয়নি। ইন্ডিয়া রেটিংস বলেছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ মেনে রাজ্যের জিডিপি-র তুলনায় রাজকোষ ঘাটতি ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ৩ শতাংশে নামানো ‘অসম্ভব’ মনে হচ্ছে। কঠিন, জিডিপি-র তুলনায় দেনার হার ওই সময়ের মধ্যে ৩২.৫ শতাংশে নামানোও।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, সোমবার রাজ্য বিধানসভাতেও বিজেপি বিধায়করা একই অভিযোগ তুলেছেন। উত্তরে রাজ্যে অর্থ দফতরের স্বাধীন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, সরকার চলতি বছরেই সড়ক-সেতুর মতো পরিকাঠামোয় বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করেছে। প্রয়োজন মাফিক বরাদ্দ হয়েছে কেন্দ্রের সব প্রকল্পে। রাজ্য কড়া আর্থিক শৃঙ্খলার মধ্যেই রয়েছে।
ইন্ডিয়া রেটিংসের রিপোর্ট অবশ্য বলছে, বাজেটে আগামী অর্থবর্ষে রাজ্যের আর্থিক বৃদ্ধির ১০.৬% অনুমান ‘সামান্য বেশি’। নিজস্ব আয় ১১.৪% হারে বাড়বে ধরে নেওয়াটাও অতিরিক্ত ‘আশাবাদী’ মনোভাব। রাজস্ব খাতে ব্যয় কমিয়ে দেখানো হয়েছে। পরিকাঠামো খাতে খরচের লক্ষ্য বাড়িয়ে বলা হয়েছে। কারণ বাজেটে তারাই বলছে, এই অর্থবর্ষে বরাদ্দের মাত্র ৬৪.৩% ব্যয় করতে পারবে রাজ্য সরকার।