কৌশিক বসু। ফাইল চিত্র
সম্প্রতি মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ় হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, ভারতে জিডিপি বৃদ্ধির হার শূন্যে দাঁড়াতে পারে। এ বার ব্রোকারেজ সংস্থা নমুরার সংশোধিত পূর্বাভাস, শূন্য তো অনেক দূর, তা বরং সঙ্কুচিত হতে পারে ৫.২%। এই অবস্থায় করোনার ধাক্কায় অর্থনীতির এমন মুখ থুবড়ে পড়ার ঝুঁকি সামলাতে বিপুল অঙ্কের আর্থিক ত্রাণের জন্য সওয়াল করলেন বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। তাতে চড়া রাজকোষ ঘাটতির মুখে পড়তে হলেও। অর্থনীতিকে সঙ্কটের খাদ থেকে টেনে তুলতে এর আগে ঠিক যে সওয়াল করেছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন থেকে শুরু করে জঁ দ্রেজ়ের মতো বহু অর্থনীতিবিদ।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আর এক প্রাক্তন গভর্নর দুব্বুরি সুব্বারাওয়ের বার্তা, আরও বেশি খরচ করতেই হবে সরকারকে। বিশেষত লকডাউনের জেরে সঙ্কটে পড়া পরিবারগুলিকে বাঁচাতে। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রকে আরও বেশি পরিবারকে, আরও বেশি দিন ধরে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। কারণ, বেশির ভাগেরই সঞ্চয় বলে আর কিছু নেই। খরচের ক্ষেত্রে এটাই সরকারের প্রথম চ্যালেঞ্জ।’’
অন্তত টিকে থাকার রসদটুকু জোগাতে দরিদ্রদের হাতে নগদ আর ছোট সংস্থাকে পুঁজি জোগানোর জন্য প্রয়োজনে নোট ছাপানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক কৌশিকও বলেছেন, নোট ছাপাতে হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে খুব অল্প করে এগোনোর পক্ষপাতী তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতে এমনিতেই অসাম্য খুব বেশি। ফলে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকছেই। আমার ভয় অতিমারি সেই অসাম্য আরও বাড়িয়ে না দেয়।’’ বরং সম্পদ বা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তিতে অনেক খোলা মনে কর বসানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। তাঁর ইঙ্গিত, দারিদ্র দূর করার অন্যতম পথ এটি।
সম্প্রতি মুডি’জ় চলতি অর্থবর্ষে চড়া রাজকোষ ঘাটতি সম্পর্কে সাবধান করেছে। কেন্দ্র বার্ষিক ধার নেওয়ার লক্ষ্য ৫৪% বাড়িয়ে ১২ লক্ষ কোটি টাকা করায় নমুরার বার্তা, ঘাটতি ছুঁতে পারে জিডিপি-র ৫-৫.৬ শতাংশ। বাজেটে ৭.৮ লক্ষ কোটি ধারের সীমা বাঁধার সময় যে লক্ষ্য ছিল ৩.৫%। আর সুব্বারাওয়ের দাবি, বাড়তি ধারের ধাক্কায় রাজ্য ও কেন্দ্র মিলিয়ে ঘাটতি পৌঁছতে পারে ১৪ শতাংশে। যদিও রাজন-সহ বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদেরই মত, ঘাটতির চোখরাঙানি যতই থাক, সরকার এখন খরচ না-করলে অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: এগোনোর চেষ্টা চলবে প্রতিকূলতাকে মেনেই
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)