ভারতকে ‘শুল্কের রাজা’ তকমা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বার বার আপত্তি তুলেছেন এ দেশের শুল্ক নীতি নিয়ে। যদিও আমেরিকার এই দাবি ঠিক নয় বলেই মত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের একাংশের। তাঁদের দাবি, আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশই কৃষি পণ্যের উপরে চড়া কর চাপায়। ভারতেরও নিজেদের স্বার্থ রক্ষার অধিকার রয়েছে।
ট্রাম্পের অভিযোগ, হার্লে ডেভিডসন বাইক বা মার্কিন হুইস্কির মতো বিভিন্ন পণ্যে চড়া শুল্ক চাপায় ভারত। ভারতের রফতানিকারীদের সংগঠন ফিয়োর ডিরেক্টর জেনারেল অজয় সহায়ের দাবি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মে বিভিন্ন পণ্যে ভারত গড়ে সর্বোচ্চ ৪৮.৫% শুল্ক বসাতে পারে। কিন্তু এখনকার হার ১৩.৪%। এটাই প্রমাণ করে যে ভারত ‘শুল্কের রাজা’ নয়। যদি হত, সে ক্ষেত্রে ওই হার সর্বোচ্চ সীমার কাছাকাছি পৌঁছে যেত।
সহায়ের মতে, মদে ১৫০%, কফিতে ১০০%, গাড়িতে ৬০-৭৫ শতাংশের মতো কিছু পণ্যে বেশি করই ভারতকে ট্রাম্পের চোখে ‘ভিলেন’ করে তুলেছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে আমেরিকা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশই কৃষি পণ্য-সহ নানা সামগ্রীতে চড়া শুল্ক বসায়। জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ধরেরও মত, ট্রাম্পের অভিযোগ ভিত্তিহীন। এমনকি আমেরিকা নিজেরাই বাদামে ১৬৪% বা তামাকে ৩৫০% শুল্ক চাপায় বলে তাঁর দাবি।
ভারত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম মেনে স্বচ্ছ ভাবে লেনদেনে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ট্রেড প্রোমোশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান মোহিত সিঙ্গলা। তাঁর দাবি, মার্কিন অভিযোগ পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে ঠিক নয়। উদাহরণ হিসেবে অন্যান্য দেশের কথাও তুলে এনেছেন সিঙ্গলা। দাবি করেছেন, জাপানে কিছু পণ্যে কর বসে ৭৩৬%। কোরিয়ার ক্ষেত্রে তা ৮০৭%। অন্যান্য দেশের মতোই ভারতেরও দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করার অধিকার রয়েছে বলেও তাঁর মত। আবার উন্নত দেশ হিসেবে আমেরিকার নিজেদেরই কর ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো উচিত বলে মনে করেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফরেন ট্রেডের অধ্যাপক রাকেশ মোহন জোশী।
প্রসঙ্গত, বাণিজ্য নিয়ে সমস্যা মেটাতে আমেরিকাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। প্রস্তাবের খুঁটিনাটি নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি।