প্রতীকী ছবি।
পুরনো করের (রেট্রস্পেকটিভ ট্যাক্স) মামলায় নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে জয় পাওয়ার পরেই বকেয়া উদ্ধারের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের আদালতে আবেদন জানানো শুরু করেছে ব্রিটেনের কেয়ার্ন এনার্জি। ঠিক একই ভাবে আমেরিকার আদালতেও আর্জি জানিয়েছে তারা। উদ্দেশ্য, সে দেশে থাকা এয়ার ইন্ডিয়ার মতো ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে বকেয়া আদায়। এ বার কেয়ার্নের সেই দাবি খারিজের আবেদন জানিয়ে ওয়াশিংটনের আদালতে আবেদন জানাল ভারত সরকার। তাদের যুক্তি, আমেরিকার আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রের সম্পত্তিকে রক্ষা করার সুযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট সরকারের সামনে। উল্লেখ্য, ভারতের থেকে ১২০ কোটি ডলার আদায়ের লক্ষ্যে মামলা করেছে কেয়ার্ন।
২০১২ সালে রেট্রস্পেকটিভ করের আইন কার্যকর করেছিল তৎকালীন ইউপিএ সরকার। সেই আইন অনুযায়ী, যে সমস্ত সংস্থার ভারতে ব্যবসা রয়েছে তারা বিদেশের মাটিতে সেই ব্যবসা হাতবদল করে মূলধনী মুনাফা করলেও, কেন্দ্র তার উপরে কর দাবি করতে পারবে। সেই দাবি করা যাবে পুরনো লেনদেনের উপরেও। এই আইনকে কাজে লাগিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৭টি সংস্থার থেকে মোট ১.১০ লক্ষ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছে। শুধু কেয়ার্নের কাছেই চাওয়া হয়েছে ১০,২৪৭ কোটি টাকা।
২০০৬ সালে ব্যবসা পুনর্গঠনের আগে কেয়ার্ন ইন্ডিয়াকে নিজেদের ভারতের ব্যবসা বিক্রি করেছিল ব্রিটেনের কেয়ার্ন এনার্জি। ২০১২ সালের ওই সংশোধিত আয়কর আইন অনুযায়ী কেয়ার্ন এনার্জিকে নোটিস পাঠানো হয়। দাবি করা হয় পুরনো সেই লেনদেনের উপরে কর। কেয়ার্ন রাজি না-হলে বেদান্তে তাদের শেয়ার, ডিভিডেন্ড এবং কর ফেরতের টাকা আটকে দাবির একাংশ আদায় করে নেয় কেন্দ্র। সেই টাকা আদায়ের লক্ষ্যেই কেয়ার্ন নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের দ্বারস্থ হয়। গত ডিসেম্বরে সালিশি আদালত জানায়, ব্যবসা পুনর্গঠনের মাধ্যমে কর ফাঁকি দেয়নি কেয়ার্ন এনার্জি। তার পরে কেন্দ্রের আদায় করে নেওয়া সেই টাকা ফেরাতে বিভিন্ন দেশের আদালতে আবেদন জানিয়েছে সংস্থাটি। ফ্রান্সের আদালত তাদের কিছু আবেদন মঞ্জুরও করেছে।
তবে এরই মধ্যে সম্প্রতি রেট্রস্পেকটিভ করের আইন ফেরানোর জন্য সংশোধনী বিল পাশ হয়েছে সংসদে। তা কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্র। এক সরকারি আধিকারিকের কথায়, ‘‘রেট্রস্পেকটিভ করের দাবি প্রত্যাহারের অন্যতম শর্ত হল, সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সরকার এবং কর দফতরের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে হবে। তবে এখন গোটা বিষয়টি কার্যকর করার প্রক্রিয়া চলছে। তার আগে পর্যন্ত যে কোনও মামলা লড়ার ব্যাপারে সরকার দায়বদ্ধ। সে কারণেই আবেদন জানানো হয়েছে।’’