প্রতীকী ছবি।
করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাফল্য দাবি করতে গিয়ে সরকার প্রায় নিয়ম করে বোঝানোর চেষ্টা করছে তাদের পরিকল্পনা কতটা নিখুঁত এবং তার হাত ধরে অর্থনীতি কী ভাবে ছন্দে ফিরছে। কেন্দ্রের তিন দফা দাওয়াই সম্পর্কে বৃহস্পতিবার ফের সেই বার্তা দিলেন অর্থ মন্ত্রকের প্রিন্সিপাল আর্থিক উপদেষ্টা সঞ্জীব সান্যাল। যদিও এ দিনই সেই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা সংস্থা অক্সফোর্ড ইকনমিক্স-এর রিপোর্ট। যেখানে বলা হয়েছে, করোনার হানায় সারা বিশ্বে ভারতেরই চোট লেগেছে সব থেকে বেশি। এতটাই যে, অতিমারি-পর্ব পেরিয়েও যন্ত্রণা বইতে হবে দীর্ঘ দিন। যে কারণে এ বছর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দেশের গড় আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে তারা।
সম্প্রতি করোনার মোকাবিলা এবং অর্থনীতির হাল, দুই মাপকাঠিতেই এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে ভারতের সব থেকে পিছনে থাকার পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। এ দিন মার্চেন্ট চেম্বারের বার্ষিক সভায় সঞ্জীব সান্যালের অবশ্য দাবি, তাঁরা যথাযথ পরিকল্পনা করে ঠিক পথেই এগোচ্ছেন।
ভারতে সব থেকে কড়া লকডাউনের পরেও সরকারের তরফে যে সরাসরি আর্থিক ত্রাণ তেমন মেলেনি, সে কথাও বলেছে অক্সফোর্ড ইকনমিক্স। তাদের দাবি, সরাসরি ত্রাণ দেওয়ার উপযুক্ত ও সুপরিকল্পিত প্রকল্প আনলে, অর্থনীতিতে করোনার আগে থেকেই আসা ধাক্কা অন্তত অর্ধেক কমানো যেত। আর্থিক ভাবে বিপর্যস্ত মানুষদের হাতে সে ভাবে নগদ না-দেওয়া নিয়ে এর আগে তোপ দেগেছেন বিরোধী ও তাবড় অর্থনীতিবিদেরা। এ দিন সঞ্জীবও সেই সব অভিযোগের কথা তোলেন। তবে তাঁর পাল্টা যুক্তি, লকডাউনের সময়ে সরাসরি অর্থিক সুবিধা দিলে কাজ হত না। বরং আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরুর সময় এখন ধাপে ধাপে তা দেওয়া যুক্তিযুক্ত।
অক্সফোর্ড ইকনমিক্সের দাবি, রাজকোষ ঘাটতি এ বার বেড়ে হতে পারে ৭%। কিন্তু সরকারের খরচ বৃদ্ধির কারণে তা হবে না। আর তা না-হলে বৃদ্ধির পালে হাওয়া লাগার সম্ভাবনা বেশ কমই।
এ দিন অবশ্য মূল্যায়ন সংস্থা মুডিজ় চলতি অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপির সঙ্কোচনের পূর্বাভাস কিছুটা কমিয়েছে। আগে তা ১১.৫% ধরলেও, সংশোধিত হার ১০.৬%।