প্রতীকী ছবি
করদাতাদের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর ব্যবস্থা না-নেওয়ার নির্দেশ মাস কয়েক আগেই দিয়েছিল কেন্দ্র। আয়কর দফতরের অফিসারদের দাবি, এর অঙ্গ হিসেবে কর ফাঁকির পুরনো ঘটনাগুলিতে নোটিস পাঠানোর ব্যবস্থা (ইনকাম ট্যাক্স বিজ়নেস অ্যাপ্লিকেশন) আপাতত বন্ধ। যার ভিত্তিতে আদায় করা হয় বকেয়া কর ও জরিমানা। এর সুযোগ নিয়ে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও করদাতা আয়কর ফাঁকি দিয়েও পার পেয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা তাঁদের। একাংশের আক্ষেপ, এর ফলে আয়কর দফতরকে চলতি বছরে ওই খাতে মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করতে হতে পারে।
আয়কর দফতরের সূত্র জানাচ্ছে, কর গোপন করে কেউ রিটার্ন জমা দিলেও, পরবর্তীকালে ব্যাঙ্ক, শেয়ার বাজার, পণ্য লেনদেনের বাজার, বৈদেশিক বাণিজ্য দফতর ইত্যাদি সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট রিটার্ন ফের খতিয়ে দেখে আয়কর বিভাগ। কর ফাঁকির অঙ্ক ও গুরুত্বের নিরিখে তাঁদের কারও বিরুদ্ধে রিটার্ন জমার চার বছর, কারও বিরুদ্ধে ছ’বছরের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হয়। এই দু’ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে ৩০ জুন। যার পরে তাঁদের বিরুদ্ধে আর কখনওই পদক্ষেপ করা যাবে না। পাঠানো যাবে না নোটিস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আয়কর-কর্তার দাবি, কর ফাঁকি দিতে আয় গোপন করেছেন, এমন বহু তথ্য নজরে এসেছে। সেগুলি খতিয়ে দেখার কাজও সারা। শুধু কলকাতা সার্কলেই এ ধরনের প্রায় ১০ হাজার ঘটনা আছে।
কিন্তু করদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে বারণ করেছে কেন্দ্র। সেই নীতি অনুসারে এখন নেটে নোটিস পাঠানো যাচ্ছে না। ফাঁক গলে পার পেয়ে যেতে বসেছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি।
আর এক কর্তার আক্ষেপ, ‘‘অন্যায় করেও কত জন জরিমানার হাত থেকে বেঁচে যাবেন। দেশের আয় হতে পারত অনেক। কিন্তু হবে না।’’ তিনি জানান, পুরনো রিটার্নের ফাইল খুলে আয়কর আইনের ১৪৮ ধারায় সংশ্লিষ্ট করদাতাকে নোটিস জারি করতে হয়। এ ছাড়া, ২০১৯-২০ হিসেববর্ষের জন্য ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত শেষ করা স্ক্রুটিনি-তেও (খতিয়ে দেখা রিটার্ন) বহু কর ফাঁকি নজরে এসেছে। তাঁদের জরিমানা হওয়ার কথা ২৭১(১)(সি) ধারায়। কিন্তু তাঁর প্রশ্ন, নোটিস পাঠানো ও জরিমানা করার পুরো ব্যবস্থাটা না-খুললে ফাঁকি দেওয়া কর আদায় করা যাবে কী করে!