প্রতীকী ছবি।
সরকার পেট্রল-ডিজ়েলে কত বার কতটা শুল্ক কমিয়েছে, সেই তথ্য কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল সেই শুল্ক থেকে তাদের রাজকোষ ভরার পরিসংখ্যানে। এই সংক্রান্ত তথ্যে আগেও উত্তাল হয়েছে দেশ। মোদী জমানাকে দুষেছেন বিরোধীরা। সোমবার ফের সরকারি তথ্যেই প্রকাশ, তেলে শুল্ক সর্বোচ্চ হওয়ার রেকর্ড তৈরি হয়েছিল দেশে কোভিড হানার শুরুতেই। ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বছর সাতেকের মধ্যে সেই শুল্ক ও কর থেকে কেন্দ্রের আয় বেড়েছে ১৮৬%। ২০১৪-১৫ সালের সঙ্গে তুলনা টানলে ২০২১-২২ সালে ওই আয় পৌনে তিন গুণ। রাজ্যগুলির রোজগার বৃদ্ধিও কম নয়, ৭৫%।
তার পরেই ফের পেট্রল, ডিজ়েল, রান্নার গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে মুখর হয়েছে বিভিন্ন মহল। একাংশ আরও এক দফা শুল্ক ও কর ছাঁটাইয়ের পক্ষে সওয়াল করেছে। আবারও প্রশ্ন উঠেছে, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম চড়া থাকলে দেশে জ্বালানি যত দ্রুত বাড়ে, কমলে উল্টোটা হয় না কেন? বিশেষজ্ঞেরা মনে করিয়েছেন, সম্প্রতি অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলে ১০০ ডলারের নীচে নামলেও ভারতে তার ছাপ পড়েনি। আজ তা নেমেছে ৯৯.৬৫ ডলারে। অথচ গত মে মাসের শেষে শুল্ক কিছুটা কমার পরে তেলের দামে আর সুরাহা মেলেনি। ৭২ দিন ধরে তা স্থির।
আজ অবশ্য বিমান জ্বালানি এটিএফের দর দাম ১২% কমিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। দাম কমার এই হার রেকর্ড। এই পদক্ষেপও পেট্রল-ডিজ়েলে এমন সুরাহা দেওয়ার দাবি উস্কে দিয়েছে। চলতি বছরে লাগাতার ১১ বার বৃদ্ধির পরে এটিএফ কমায় সামান্য স্বস্তিতে বিমান সংস্থাগুলি। তবে তারা বলছে, তেল কিনতে কিলোলিটারে খরচ এখনও লক্ষাধিক। ফলে বিমানে চড়ার খরচ তেমন কমবে না বলেই ধারণা। অগস্টে কমেছে অটো-এলপিজি (কলকাতায় লিটারে ৬.১২ টাকা) এবং বাণিজ্যিক ব্যবহারের রান্নার গ্যাসের দামও।
তেলের শুল্ক সংক্রান্ত প্রশ্নের লিখিত জবাবে সোমবার পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি রাজ্যসভায় জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে পেট্রল ও ডিজ়েলে লিটারে শুল্ক ছিল যথাক্রমে ৯.৪৮ ও ৩.৫৬ টাকা। ২০২০ সালের মে মাসে তা হয় যথাক্রমে ৩২.৯৮ এবং ৩১.৮৩ টাকা। ২০১৪-১৫ সালে পেট্রোলিয়াম ক্ষেত্র থেকে কেন্দ্রের শুল্ক বাবদ ১.৭২ লক্ষ কোটি টাকা আয় হয়েছিল। ২০২১-২২ সালে হয়েছে ৪.৯২ লক্ষ কোটি। রাজ্যগুলির আয় ১.৬ লক্ষ কোটি থেকে বেড়ে হয় ২.৮২ লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে অবশ্য বার কয়েক শুল্ক হ্রাসের কথাও জানিয়েছেন তেলি। যেমন শেষ কমেছে মে মাসে।