সাত দিনে টানা ১৫৪৪ পয়েন্ট উঠে শুক্রবার সেনসেক্স থামে ৬১ হাজারের ঘরে (৬১,১১২)। প্রতীকী ছবি।
বাজারের অস্থিরতা কিছুটা হলেও কমেছে। সাময়িক স্বস্তির হাওয়া লেগেছে দুই সূচকের পালে। সাত দিনে টানা ১৫৪৪ পয়েন্ট উঠে শুক্রবার সেনসেক্স থামে ৬১ হাজারের ঘরে (৬১,১১২)। ফের ১৮ হাজারের ঘরে ঢুকেছে নিফ্টিও। এমন উত্থানের কারণ, আপাতত সুদ বৃদ্ধি বন্ধ হওয়া, খুচরো ও পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা কমা, সুদ না বাড়ায় মাথা নামানো বন্ডের ইল্ড, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমা ইত্যাদি। তার উপর পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূল হওয়ায় আবার ভারতের শেয়ার বাজারে পুঁজিঢালছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। এ ছাড়া, জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে বিভিন্ন সংস্থার আর্থিক ফলও প্রত্যাশার থেকে ভাল হয়েছে। আকর্ষণীয় হারে ডিভিডেন্ড দিচ্ছে একাংশ। আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হওয়ার পরে ভারতে ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক স্বাস্থ্য নিয়ে যে দুশ্চিন্তা দানা বেঁধেছিল, তার অনেকটাই দূর হয়েছে। ভাল ফল প্রকাশ করেছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক এবং কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের মতো বেসরকারি ব্যাঙ্ক।
এখন লগ্নিকারীরা এপ্রিলে মূল্যবৃদ্ধি জানতে উদগ্রীব। অপেক্ষা করছেন ভাল বর্ষার জন্য। কারণ ফলন ভাল হলে খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বাজারের নজর কর্নাটকে ভোটের ফলের দিকেও, যা প্রকাশিত হবে ১৩ মে। এর দিন দুয়েকের মধ্যেই ত্রৈমাসিক ফল প্রকাশের পালা শেষ। বাকি সংস্থার আয়-মুনাফাও স্পষ্ট হবে। কাজেই মে মাসের মাঝামাঝি থেকে বাজার মাঝারি মেয়াদের জন্যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোতে পারবে। এপ্রিলেও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে থাকলে তা সদর্থক বার্তা বয়ে আনবে লগ্নিকারীদের জন্য। আরও চড়তে পারে সূচক।
মূল্যবৃদ্ধি নামা এবং সুদ বৃদ্ধিতে ছেদ পড়ায় বাড়ছে বন্ডের বাজার দরও। ফলে নামছে ইল্ড। ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের ইল্ড গত সপ্তাহে নেমেছে ৭.১০ শতাংশে। তা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ছিল ৭.২২ শতাংশের আশেপাশে। ১০-১২ বেসিস পয়েন্ট ইল্ড কমায় সুদ বাবদ সরকারের এবং বন্ড বাজারে ছাড়া সংস্থার খরচ কমবে। বাড়বে বন্ড ফান্ডের ন্যাভ। এখনকার মতো শর্তগুলি দু’মাস বাজারের অনুকূলে থাকলে, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সূচক নতুন উচ্চতায় উঠতে পারে। যার সুফল পাবেন ফান্ডে লগ্নিকারীরাও।
গত সপ্তাহে যারা ফল জানিয়েছে, তাদের মধ্যে মুনাফা বেড়েছে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক (৪৬%), হিন্দুস্তান ইউনিলিভার (৯.৭%), মারুতি সুজ়ুকি (৪২%), নেসলে ইন্ডিয়া (২৪.৭%), বজাজ অটোর (২.৫%)। লাভ কমেছে উইপ্রো, টেক মহিন্দ্রা, আল্ট্রা টেক-এর মতো একাংশের। ৫৭২৮ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক।
(মতামত ব্যক্তিগত)