—প্রতীকী চিত্র।
দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে ফের সতর্ক করল আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)। তাদের দাবি, বৃদ্ধির গতি ফেরাতে দ্রুত পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র। জোর দেওয়া হোক স্বচ্ছ আর্থিক নীতি তুলে ধরার উপরে। যাতে লগ্নির সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয় সংস্থাগুলির। সেই সঙ্গে বর্তমান আর্থিক অবস্থায় জানুয়ারিতে আবারও চলতি অর্থবর্ষের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছে তারা।
সোমবার গভীর রাতে ভারতের অর্থনীতি নিয়ে রিপোর্ট পেশ সংক্রান্ত আলোচনায় ভারতে আইএমএফের প্রধান রনিল সালগাডো বলেন, ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির (এনবিএফসি) নগদে টান পড়ায় বেসরকারি সংস্থাগুলির মূলধন জোগাড়ের পক্ষে বড় বাধা তৈরি হয়েছে। গ্রামে আয় কমায় ধাক্কা খাচ্ছে চাহিদা। অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে জিএসটি চালুর কারণেও। এই অবস্থায় ঝিমুনি কাটাতে দ্রুত নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। বিশেষত জোর দেওয়া উচিত আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি আনা এবং আস্থা ফেরানোর উপরে। প্রয়োজনে সুদ ছাঁটাই বজায় রাখুক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
রিপোর্টে আইএমএফ বলেছে, কয়েক বছরে রাজকোষ ঘাটতির পরিসংখ্যানে উন্নতি দেখা গেলেও, গত এক দশকে মূলত বাজেট বহির্ভূত খাতে খরচ বাড়ায় জিডিপির সাপেক্ষে সরকারি ঋণের অনুপাত প্রায় একই রয়েছে। ফলে রাজকোষে টানাটানির কথা মাথায় রেখেও কেন্দ্রকে এখন জোর দিতে হবে ঋণ কমানোয়। সেই সঙ্গে তুলে ধরতে হবে অর্থনীতির তথা ঘাটতির আসল ছবি। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার ছাড়াও, সরকারি সংস্থাগুলির আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছতার সঙ্গে তুলে ধরায় জোর দিয়েছে তারা।
পর্যবেক্ষণ
• আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্র,
মূলত এনবিএফসিগুলির নগদে টানের জের পড়েছে
সংস্থার মূলধন জোগাড়ে।
• গ্রামে আয় কমার জেরে মার খাচ্ছে চাহিদা।
• জিএসটিরও প্রভাব
পড়েছে অর্থনীতিতে।
কেন্দ্রের কর্তব্য
• কমানো উচিত সরকারি ঋণ নেওয়ার প্রবণতা,
যা পৌঁছেছে জিডিপির প্রায় ৮.৫ শতাংশে।
• স্বচ্ছতা জরুরি রাজকোষ সংক্রান্ত পরিসংখ্যানে, যাতে লগ্নির সিদ্ধান্ত নিতে সংস্থাগুলির সুবিধা হয়।
• কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ঘাটতির বাইরেও প্রয়োজন রয়েছে সরকারি সংস্থাগুলির আর্থিক পরিস্থিতি জানার।
• স্বল্প মেয়াদে জোর দিতে হবে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোয়।
এর আগে চলতি অর্থবর্ষে দেশের বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে এডিবি, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ-সহ বহু প্রতিষ্ঠান। ফের জানুয়ারিতে তা কমানো হবে বলে ইঙ্গিত প্রতিষ্ঠানের মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথের। সালগাডোরও মত, অক্টোবরে বৃদ্ধির হার ৬.১% হবে বলে পূর্বাভাস দেয় আইএমএফ। অথচ ডিসেম্বরেও আর্থিক কর্মকাণ্ডে শ্লথ গতি বহাল। ফলে পরের মাসে ফের পূর্বাভাস কমানো হবে।