কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।
গত বছরই ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ করে চারটি বড় ব্যাঙ্ক তৈরির কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। আগামী এপ্রিল থেকে সেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত ভাবে কার্যকর হওয়ার কথা। তার ঠিক আগে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, প্রয়োজনে ভবিষ্যতে আরও ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ প্রকল্প নেওয়া হতে পারে। সরকার সেই পথ খোলা রেখেছে।
২০১৭ সালেই দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংখ্যা ছিল ২৭। এখনও পর্যন্ত যে সমস্ত সংযুক্তিকরণ কার্যকর হয়েছে বা ভবিষ্যতে হবে, সেগুলি মিলিয়ে আগামী অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংখ্যা দাঁড়াবে ১২। পুঁজির বহরের দিক থেকে তার মধ্যে ছ’টি হতে চলেছে আন্তর্জাতিক মানের। কেন্দ্রের বক্তব্য, বিভিন্ন ক্ষেত্র ও পরিষেবা যে ব্যাঙ্কের সেরা, সংযুক্তিকরণের পরে সেই ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি গ্রহণ করা হবে। তাতে নতুন ব্যাঙ্কটি শুধু পুঁজি নয়, পরিষেবার দিক থেকেও শক্তিশালী হবে। এক সাক্ষাৎকারে অনুরাগ বলেন, ‘‘আমরা সাফল্যের সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ এবং পুঁজি ঢালার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করেছি। দেউলিয়া বিধির মাধ্যমে ব্যাঙ্কের হাতে ৪ লক্ষ কোটি টাকা ফিরে এসেছে। প্রয়োজন হলে এর পরে আরও সংযুক্তিকরণ হবে।’’ ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের মধ্যে ভারতকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে কেন্দ্র। ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ সেই প্রক্রিয়ায় গতি আনবে বলেও দাবি করেছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, সংযুক্তিকরণের পরে নতুন ব্যাঙ্কগুলির পরিষেবার ক্ষেত্র বাড়বে, উন্নত হবে প্রযুক্তি এবং ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা।
গত বছরের অগস্টে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক এবং ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অব কমার্সকে মিশিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। ঘোষণা কার্যকর হলে নতুন ব্যাঙ্কটি হতে চলেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। এ ছাড়াও সিন্ডিকেট ব্যাঙ্কের সঙ্গে কানাড়া ব্যাঙ্ক এবং এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের সঙ্গে ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক-কে মিশিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশবে অন্ধ্র ব্যাঙ্ক ও কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক। বিজয়া ব্যাঙ্ক এবং দেনা ব্যাঙ্ক ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্ক অব বরোদার সঙ্গে মিশে গিয়েছে। তার আগে স্টেট ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল পাঁচটি সহযোগী ব্যাঙ্ক এবং ভারতীয় মহিলা ব্যাঙ্ক-কে।
বাজেটে এলআইসি-কে শেয়ার বাজারে নথিভুক্তির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। অনুরাগের বক্তব্য, এতে এলআইসি-র কাজের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসবে। বাড়ানো যাবে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ। শক্তিশালী হবে শেয়ার বাজারও। উল্লেখ্য, আগামী অর্থবর্ষে বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ২.১০ লক্ষ কোটি টাকা রাজকোষে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র।
এ দিকে, সরকারি সূত্রের খবর, কেন্দ্র শীঘ্রই জিএসটি ক্ষতিপূরণ খাতে আরও ৩৫,০০০ কোটি টাকা রাজ্যগুলির জন্য মঞ্জুর করতে পারে। সম্প্রতি এই আশ্বাস দেন অনুরাগ।