পেনশনভোগীদের মুশকিল আসান। ছবি: সংগৃহীত।
অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মীদের জন্য এ বার বিরাট সুবিধা। জীবন শংসাপত্রের জন্য আর কোথাও দৌড়নোর প্রয়োজন নেই। আপনার স্মার্টফোন আর আপনি। ব্যস। শুধু গুগল প্লে স্টোর থেকে দুটো অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। সদ্য বাজারে এসেছে এই সুবিধা। এ বছরই। আর এর ব্যবহার খুবই সহজ।
নিয়ম যাই বলুক, এত দিন পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগীদের, বিশেষ করে যাঁরা অশক্ত, তাঁদের পরিজনদের এই অক্টোবর মাস থেকে শুরু হত এক মাথাব্যথার সময়। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের শাখায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া, সই করা ফর্ম জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করাই তো একটা ঝামেলা। তার উপর যদি তিনি কোনও কারণে চলাফেরার ক্ষমতা না থাকে, তাহলে তো আরও ঝামেলা। ব্যাঙ্কে গিয়ে তদ্বির করে কোনও ব্যাঙ্ক কর্মীকে বাড়িতে নিয়ে এসে পেনশনভোগী বেঁচে আছেন তা প্রত্যক্ষ করাতে হত।
এই সব সমস্যার কথা ভেবে আধার নির্ভর বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবন শংসাপত্র দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু তাতে স্ক্যানার লাগে যা ব্যবহার করার ঝামেলা আছে। তাই সেই ব্যাঙ্কে গিয়েই হাজিরা দিয়ে এই সার্টিফিকেট করাতে হত। কয়েক বছর আগে ডাকঘর কর্তৃপক্ষকে এই কাজের সামিল করে নেওয়া হয় যাতে অশক্ত পেনশনভোগীরা বাড়িতে বসেই বেঁচে থাকার খবর জানান দিতে পারেন। কিন্তু এখানেও একটা সমস্যা তৈরি হয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আঙুলের ছাপ পাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে। কারণ আঙুলের চামড়ার ঢেউ মুছে যায় বয়সের সঙ্গে।
এ বার এই নতুন পদ্ধতিতে আর কাউকে লাগবে না জীবন শংসাপত্র তৈরি করানোর কাজে— কোনও খরচ ছাড়াই। আপনার শুধু লাগবে একটা স্মার্ট ফোন। ঠিক কী লাগবে?
১. অ্যানড্রয়েড সিস্টেম ৮ বা তার উপরের ফোন। (২০১৭ সালের পরে কেনা সব অ্যান্ড্রয়েডই এই সিস্টেমে চলে)
২. অন্তত র্যাম ৪ জিবি
৩. ৫০০ এমবি ফাঁকা মেমরি
৪. অন্তত ৫ এমপি-র ক্যামেরা
ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। অতি সাধারণ স্মার্ট ফোনেই এই সব কিছু থাকে। এ বার গুগল প্লে স্টোরে যান সেখান থেকে আপনাকে ডাউনলোড করতে হবে —
ক) আধার ফেসআরডি সার্ভিস (এটা ডাউনলোড করার পরই কিন্তু আপনি স্ক্রিনে আর দেখতে পাবেন না। এটি পিছন থেকে কাজ করে)
খ) জীবন প্রমাণ ফেস অ্যাপ (অন্যান্য অ্যাপ যে ভাবে কাজ করে, এটিও সে ভাবেই কাজ করে)
অ্যাপটি এবার আপনার কাছ থেকে যে তথ্য চাইবে সেগুলি হল
• আধার নম্বর
• পিপিও নম্বর
• এজেন্সির নামে ক্লিক করে আপনার পেনশন যে ব্যাঙ্ক থেকে নিয়ে থাকেন তার নাম
• ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট
• নথিভুক্ত ফোন নম্বর
• একটি ইমেল
ফোন নম্বর দেওয়ার পরে একটা ভেরিফিকেশন ওটিপি আসবে। তার পরেই অ্যাপটি মুখ স্ক্যান করতে চাইবে। পেনশনভোগীর মুখ স্ক্যান করুন। ওঁকে চোখ পিটপিট করতে বলুন। তার পরই দেখবেন জীবন শংসাপত্র হয়ে গিয়েছে। তার আগে অবশ্য স্ক্রিনে প্রথাগত বাকি তথ্যও ফুটে উঠবে যা আপনাকে টিক দিতে হবে। যেমন আপনি আবার চাকরি নিয়েছেন কি না, আবার বিয়ে করেছেন কি না ইত্যাদি।
ফোনে আর ইমেলে আপনার কাছে একটা নম্বর আসবে। জীবন প্রমাণ সাইটে গিয়ে ওই নম্বর দিয়ে জীবন শংসাপত্র ডাউনলোড করে নিন।
ব্যাপারটা কিন্তু খুব সহজ। শুধু একটাই সমস্যা। প্রাথমিক ভাবে এটা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের জন্যই চালু হয়েছে। আরও একটা কথা। যে কেউ এই দু’টি অ্যাপ ডাউনলোড করে অন্য যে কোনও পেনশনভোগীর জীবন শংসাপত্র করিয়ে দিতে পারেন। এ রকম নয় যে অ্যাপ দু’টি পেনশনভোগীর রেজিস্টার্ড ফোনেই ডাউনলোড করতে হবে এবং সেই অ্যাপ থেকে শুধু তিনিই জীবন শংসাপত্র বানাতে পারবেন।