—প্রতীকী চিত্র।
জিয়ো, এয়ারটেল এবং ভোডাফোন আইডিয়া মোবাইলের মাসুল অনেকখানি বাড়ানোয় গ্রাহক টানছে বিএসএনএল। যে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থার সংযোগ আশঙ্কাজনক ভাবে কমছিল। বিএসএনএল সূত্রে খবর, চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনেই তাদের বেঙ্গল সার্কেলে যুক্ত হয়েছেন প্রায় ৪৫,৫০০ জন। কলকাতা সার্কেলে সেই সংখ্যাটা ১৬,৫০০। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ৪জি আনতে বিপুল দেরি করায় প্রতিযোগিতায় ইতিমধ্যেই অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে বিএসএনএল। পরিষেবা নিয়েও অভিযোগ ছিল বিস্তর। ফলে প্রশ্ন থাকছে, সংস্থায় নতুন গ্রাহকের ঢল নামলেও, তাঁদের ধরে রাখা যাবে তো? বিশেষত বেসরকারি সংস্থাগুলি যেহেতু মাসুল খাতে আয় বাড়িয়ে ৫জি-সহ বিভিন্ন পরিষেবার মান আরও উন্নত করতে কোমর বাঁধছে।
বিএসএনএলের কলকাতা ও বেঙ্গল সার্কেলের সিজিএম দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থাগুলি মাসুল বাড়ানোয় এবং আমরা ৪জি আনায় (আলোচ্য) ১০ দিনে অনেক বেশি সংযোগ দিয়েছি। আগের তুলনায় দৈনিক পাঁচ-ছ’গুণ বেশি।’’ সূত্র জানাচ্ছে, নতুন গ্রাহকদের এক তৃতীয়াংশই অন্য সংস্থার। তাঁরা মোবাইল নম্বর এক রেখে নেটওয়ার্ক বদলাচ্ছেন (মোবাইল পোর্টেবিলিটি)। বেঙ্গল সার্কেলে ১০ দিনে এমন ১৩,১৮০ সংযোগ দিয়েছে সংস্থা, কলকাতা সার্কেলে ৫৮০০। বেশির ভাগই আসছেন জিয়ো ছেড়ে। দুই সার্কেল মিলিয়ে ওই ১০ দিনে জিয়ো থেকে বিএসএনএলে এসেছে প্রায় ৮৫০০টি মোবাইল নম্বর।
যদিও এই সুযোগ কতটা কাজে লাগানো যাবে, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্নও। বিএসএনএলের কর্মী ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের বার্তা, ‘‘গ্রাহক পেলেই তো হল না। তাঁদের ধরে রাখতে হলে ভাল পরিষেবা দিতে হবে। সে জন্য পরিকাঠামোর উন্নতি জরুরি। বিশেষত এত দেরিতে যেহেতু ৪জি আনা হল। কর্মীদের দিয়ে কাজ করানোর মানসিকতাও বদলাতে হবে।’’ তবে যাবতীয় সংশয় উড়িয়ে সংস্থা কর্তৃপক্ষের দাবি, এখনও দেশে ৪জি বিস্তারের সুযোগ রয়েছে। উন্নত পরিষেবা দিয়ে সেই ফাঁকা জায়গাটাই দখল করতে চাইছেন তাঁরা।
সংস্থার কলকাতা সার্কেলের প্রাক্তন শীর্ষকর্তা বিশ্বজিৎ পালের দাবি, ‘‘সরকার যে ভাবে বিএসএনএলকে চালাতে চায়, সংস্থা সে ভাবেই চলবে। তবে এখন তারা খরচ করছে। ৪জি উন্নত করার চেষ্টা করছে। আশা করা যায় গ্রাহকেরা সুবিধা পাবেন।’’ গৌতম অবশ্য বলছেন, পরিকল্পনা করে এগোলে গ্রাহক সংখ্যা আরও বাড়ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির। যেমন, এখন একটি ‘হেল্প ডেস্ক’ খোলা দরকার বিএসএনএলের। যাতে গ্রাহকেরা সহজেই সব তথ্য জানতে পারেন।
দেবাশিসের কথায়, ‘‘আমরা এখনও অন্য সংস্থাগুলির তুলনায় কম দামে পরিষেবা দিই। পাশাপাশি, টিসিএসের প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে যে ৪জি চালু হচ্ছে, তা প্রতিযোগীদের টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ফলে আশা করছি, শীঘ্রই ফের গ্রাহকদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিতে পারব।’’ তবে বাস্তবে গ্রাহকদের উন্নত পরিষেবা দিয়ে ধরে রাখা সম্ভব হবে কি না, সেই উত্তর দেবে সময়।