ফাইল চিত্র।
বছরের প্রথম ছ’মাসের (জানুয়ারি-জুন) হিসেব ধরলে, গত বারের তুলনায় কলকাতা-সহ দেশের আটটি প্রথম সারির শহরে ফ্ল্যাট-বাড়ির বিক্রি প্রায় ৬৭% বেড়েছে। তবে আবাসন ক্ষেত্রের উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্কের সমীক্ষায় স্পষ্ট, এর মধ্যে তুলনায় কম দামি ফ্ল্যাটের (৫০ লক্ষ টাকার কম) বিক্রি কমেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ সাধারণ রোজগেরে মানুষদের আর্থিক ভাবে কতখানি বিপর্যস্ত করেছে, তার প্রতিফলন এটা। এমনকি গত ছ’মাসে সার্বিক বিক্রি বাড়লেও, এপ্রিল-জুনের বিক্রি গত বছর জুলাই-সেপ্টেম্বরের বিক্রির তুলনায় বেশ কম। এই পরিস্থিতিতে নাইট ফ্র্যাঙ্ক কর্তাদের বক্তব্য, কত দ্রুত ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে, তা নির্ভর করছে টিকাকরণের গতি এবং করোনা বিধি মেনে চলার উপরে।
তৃতীয় ঢেউয়ের চোখরাঙানিতে সন্ত্রস্ত গোটা শিল্পমহল। দ্রুত টিকাকরণেই বাঁচার রসদ খুঁজছে সকলে। সেই আশায় ভর করে নাইট ফ্র্যাঙ্কের দাবি, বছরের বাকি সময়েও ব্যবসা ভাল হবে। সংস্থার সমীক্ষা বলছে, গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে আবাসন ব্যবসার চাকা কিছুটা ঘুরতে শুরু করে। এ বছরের জানুয়ারি-মার্চে বিক্রি হয় ৭০ হাজারেরও বেশি ফ্ল্যাট। কিন্তু পরের তিন মাসেই তা নেমেছে সাড়ে ২৭ হাজারের কাছে। যদিও ২০২০ সালের এপ্রিল-জুনের থেকে সেই সংখ্যা ১৮৫% বেশি। কারণ, সে বার দেশ জোড়া লকডাউনে বিক্রি তলিয়ে গিয়েছিল।
নাইট ফ্র্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার সিএমডি শিশির বাইজলের দাবি, গত বছরের থেকে এ বার পরিস্থিতি মোকাবিলার ক্ষেত্রে একটাই মূল ফারাক— প্রতিষেধক। তাঁর কথায়, ‘‘গত বছর কিচ্ছু ছিল না। এ বার অন্তত একটা ঢাল, প্রতিষেধক রয়েছে।’’ যদিও তার জোগান নিয়ে বিস্তর অভিযোগ দেশ জুড়ে। তবে তাঁদের আশা, দ্রুত টিকাকরণ ও করোনা বিধি পালনে ভর করেই ছন্দে ফিরবে শিল্প। চাহিদা বাড়বে মহারাষ্ট্র, কর্নাটকের পরে পশ্চিমবঙ্গেও স্ট্যাম্প ডিউটি এবং সার্কল রেট কমার কারণেও।
সাধারণত ৪৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দামের ফ্ল্যাটকে সাধারণ রোজগেরেদের সাধ্যের মধ্যে থাকা সস্তার (অ্যাফর্ডেবল) ফ্ল্যাট ধরা হয়। নাইট ফ্র্যাঙ্কের সমীক্ষা বলছে, তাদের বিক্রীত ফ্ল্যাটগুলির তিনটি ভাগ— ৫০ লক্ষ টাকার কম (কম দামি), ৫০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকা এবং এক কোটির বেশি। কম দামিগুলির বিক্রি ৪৭% থেকে কমে ৪২% হয়েছে। কলকাতায় ৬৯% থেকে কমে হয়েছে ৬৩%। কিন্তু বেশি দামিগুলির সামান্য হলেও বেড়েছে। বিক্রি বা নতুন প্রকল্পের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি কমেছে অবিক্রীত ফ্ল্যাটের সংখ্যাও।