প্রতীকী ছবি।
জিএসটি পরিষদের শেষ বৈঠকে হোসিয়ারি-সহ হাজার টাকার কম দামের তৈরি পোশাকে কর ৫% থেকে বাড়িয়ে ১২% করা হয়েছে। ১ জানুয়ারি নতুন হার চালু হবে। বস্ত্র শিল্পের অভিযোগ, করোনাকালে ইতিমধ্যেই বিক্রিবাটা কমেছে। এ ভাবে তা আরও কমানোর বন্দোবস্ত করা হল। এর ফলে সস্তার জামা-কাপড়েরও দাম বাড়বে। ফলে চাহিদা কমতে পারে। সেটা হলে ধাক্কা খাবে উৎপাদন। পুঁজিরও অভাব ঘটার আশঙ্কা। যে কারণে প্রমাদ গুনছে পোশাক তৈরিতে যুক্ত ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলি। গত বছর লকডাউনে যাদের একাংশ চাহিদা ও পুঁজির অভাবে ঝাঁপ বন্ধ করেছে। বাকিরা নাজেহাল হচ্ছে সুতো এবং কাপড়ের মতো কাঁচামালের চড়া দামে। তাদের উদ্বেগ, কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কাড়তে পারে বস্ত্র শিল্পে যুক্ত ১৪ লক্ষ মানুষের কাজ। যার ১ লক্ষই হতে পারে পশ্চিমবঙ্গে। সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে এই শিল্পের বিভিন্ন সংগঠন।
ফেডারেশন অব হোসিয়ারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনসের সভাপতি কে বি আগরওয়াল বলেন, ‘‘জামা-কাপড় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। চড়া করে সব থেকে বেশি অসুবিধায় পড়বেন কম আয়ের মানুষ। অল্প দামের পোশাক কেনেন যাঁরা। বেশি দামের পোশাকে কিন্তু কর বাড়ছে না।’’ উল্লেখ্য, ১০০০ টাকার বেশি দামের পোশাকে কর আগের মতোই ১২%।
আশঙ্কা কোথায়
সংগঠনের অপর নেতা সঞ্জয় জৈনের অভিযোগ, ‘‘একে করোনার কারণে জোগানের সঙ্কট রয়েছে। তার উপরে ডিজ়েলের চড়া দামে পরিবহণ খরচ বাড়ছে। ফলে সুতো, কাপড়ের মতো কাঁচামালের দাম বাড়ায় তৈরি পোশাকের দর প্রায় ২৫% বেড়েছে। জিএসটি বাড়ায় দাম আরও চড়বে। কমবে পণ্যের চাহিদা। উৎপাদন কমাতে হবে।’’ এ রাজ্যে বস্ত্র শিল্পে প্রায় ১ লক্ষ কর্মী কাজ হারাতে পারেন, আশঙ্কা তাঁর। দেশে কর্মহীন হতে পারেন প্রায় ১৪ লক্ষ জন।
একই আশঙ্কা বেঙ্গল রেডিমেড গারমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি আমলগীর ফকিরের। তাঁর দাবি, ‘‘যে পাইকারি ব্যবসায়ীদের পোশাক বেচি, তার দাম পেতে মাস তিনেক অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু কেন্দ্রকে করের টাকা মেটাতে হয় প্রতি মাসে। ফলে করের হার বাড়ায় ব্যবসা চালাতে বাড়তি
মূলধন লাগবে। ছোট সংস্থাগুলির পক্ষে এখন যা জোগাড় করা অসম্ভব। করোনার ধাক্কায় প্রায় ২৫% ছোট সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। এ বার আরও হতে পারে।’’ এই অবস্থায় তাই কেন্দ্রের মুখের দিকেই তাকিয়ে বস্ত্র শিল্প।