চার হিন্দুজা ভাই। -ফাইল ছবি।
১১২০ কোটি ডলারের পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে চার হিন্দুজা ভাইয়ের বিরোধ গড়াল আদালতে। ৬ বছর আগে চার ভাইয়ের সই করা একটি চিঠি নিয়েই বিরোধের সূত্রপাত।
২০১৪ সালের জুলাইয়ে চার হিন্দুজা ভাইয়ের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছিল, কোনও এক ভাইয়ের হাতে থাকা সম্পত্তি আদতে চার ভাইয়েরই। যে কোনও ভাই অন্য ভাইদের নিয়োগ করতে পারবেন সেই সম্পত্তির তদারকিতে।
কিন্তু সেই চিঠির আইনি বৈধতা মেনে নিতে এখন রাজি হচ্ছেন না বিশ্বের ধনীতমদের অন্যতম হিন্দুজা পরিবারের কর্তা, সর্বজ্যেষ্ঠ ভাই ৮৪ বছর বয়সী শ্রীচাঁদ হিন্দুজা ও তাঁর কন্যা বিনু। তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আর্জি জানিয়েছেন, ৬ বছর আগে চার ভাইয়ের সই করা চিঠিকে যেন উইল বলে ধরা না হয়। ওই চিঠির কোনও আইনি বৈধতা নেই বলেই যেন আদালত নির্দেশ দেয়।
মঙ্গলবার লন্ডনের একটি আদালত এ ব্যাপারে একটি রুলিং দিয়ে জানিয়েছে, ওই চিঠি দেখিয়েই শুধুই শ্রীচাঁদের নামে থাকা হিন্দুজা ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন পরিবারের আর তিন ভাই গোপীচাঁদ, প্রকাশ এবং অশোক।
বিচারপতি জানিয়েছেন, চিঠির আইনি বৈধতা না মেনে নেওয়ার আর্জি শ্রীচাঁদ ও বিনু আদালতে জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন এটা কোনও উইল নয়। পারিবারিক সম্পত্তি ভাগাভাগি করার জন্য ২০১৬ সালেই চেষ্টা করেছিলেন শ্রীচাঁদ। বাকি তিন ভাইকে সে কথা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। এ ব্যাপারে অবশ্য শ্রীচাঁদের কৌঁসুলির কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: লাদাখ সফরে সেনাপ্রধান, সেনা সরাতে রাজি দু’দেশ
আরও পড়ুন: স্বার্থের অঙ্কেই ভারত-চিন দ্বন্দ্ব মেটাতে সক্রিয় রাশিয়া
তবে একটি বিবৃতিতে হিন্দুজা পরিবারের বাকি তিন ভাই বলেছেন, ‘‘এই মামলার প্রভাব হিন্দুজা গোষ্ঠীর ব্যবসার উপর পড়বে না। তবে এই মামলা আমাদের গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতার ও পারিবারিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। কারণ, দশকের পর দশক ধরে হিন্দুজা গোষ্ঠী যে ধারণা নিয়ে চলেছে, সেটা হল, সবটাই সকলের জন্য। কোনওটাই কোনও এক জনের জন্য নয়। আমরা সেই মূল্যবোধকে বাঁচিয়ে রাখতেই লড়াই করছি।’’
পরিবারের বাকি তিন ভাইয়ের বক্তব্য, যদি শ্রীচাঁদ ও বিনুর অভিযোগ আদালত মেনে নেয়, তা হলে শ্রীচাঁদের নামে থাকা যাবতীয় সম্পত্তিই যাবে তাঁর কন্যা বিনু ও তাঁর পরিবারের হাতে।
আদালত এও জানিয়েছে, বয়সের কারণে শ্রীচাঁদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে মামলাটি তাঁর হয়ে দেখছেন তাঁর কন্যা বিনু।
করোনা সংক্রমণ রুখতে গোটা বিশ্বে লকডাউনের জেরে হিন্দুজাদের অটোমোবাইল থেকে অপরিশোধিত পেট্রোলিয়ামের ব্যবসার প্রায় সবক’টিকেই প্রচুর লোকসানের ধাক্কা সইতে হয়েছে। হিন্দুজা গোষ্ঠীর অশোক লেল্যান্ডের শেয়ারের দাম গত মার্চে এক-তৃতীয়াংশ কমে যায়। প্রচুর লোকসান হয় গোষ্ঠীর পেট্রোলিয়ামের ব্যবসা ‘গাল্ফ অয়েল ইন্টারন্যাশনালে’রও।