গত বছরের থেকে বিক্রিবাটা ২৫-৪০ শতাংশ বেড়েছে। ফাইল চিত্র।
এক বছর অতিমারির চোখরাঙানি বাজার কার্যত খুলতেই দেয়নি। পরের বার সাজিয়ে-গুজিয়ে বসেও মাছি মেরেছে বহু সোনার দোকান। স্বর্ণশিল্প মহলের দাবি, দু’বছরের খরা কেটেছে শনিবার সন্ধ্যে থেকে রবিবার দিনভর। চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং পাকা সোনার ৫০ হাজার টাকার উপরে থাকা দাম ছোট-মাঝারি গয়না ব্যবসায়ীদের ধনতেরসের ব্যবসা নিয়ে কিছুটা সংশয়ে রেখেছিল। তবে একাংশের দাবি, গত বছরের থেকে বিক্রিবাটা ২৫-৪০ শতাংশ বেড়েছে।
বেলেঘাটার জয়া দাস এসেছিলেন বৌবাজারের এক বিপণিতে। বললেন, ‘‘কোভিডের জন্য গত দু’বছর সাহস করে বাড়ি থেকে বেরোতে পারিনি। এ বার দ্বিধা ছিল না।’’ ব্যবসায়ীদের দাবি, বিক্রিতে ভাটা কোভিডের আগে থেকেই। ২০১৯-এর ধনতেরসে ছিল দেশে আর্থিক ঝিমুনির প্রভাব। তবে অনেকে সে বারের পরে এই প্রথম পা রেখেছেন গয়নার দোকানে। শনি-রবিবার হওয়াতেও ভিড় বেশি ছিল। গত দু’বছর নিয়মরক্ষার জন্য সামান্য সোনা কিনেছিলেন বেহালার মঞ্জুলা দে। তাঁর দাবি, ‘‘হাতের টাকা খরচ করতে সাহস পাইনি। অতিমারির অনিশ্চয়তা কাটায় সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিলাম।’’
স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে-র দাবি, ‘‘গত বছরের থেকে অন্তত ৪০% বেশি গয়না বিক্রি হয়েছে। শনিবার সোনার দাম আচমকা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় রবিবার অনেকে এসেছেন দাম আরও বাড়ার আশঙ্কায়। ধনতেরসে কিছু ছাড়ও মেলে।’’
‘‘ব্যবসা ভাল হবে জানতাম। কিন্তু এতটা ভাবিনি,’’ জানালেন পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের এমডি উদয় চন্দ্র। ধনতেরস স্বর্ণশিল্পকে চাঙ্গা করেছে, বলছেন সেনকো গোল্ডের এমডি-সিইও শুভঙ্কর সেন এবং অঞ্জলী জুয়েলার্সের ডিরেক্টর অনর্ঘ উত্তীয় চৌধুরী। শ্যাম সুন্দর জুয়েলার্সের কর্ণধার রূপক সাহার মতে, ‘‘অনেকেই বিয়ের গয়না কিনেছেন। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হিরের গয়না কেনার আগ্রহ দেখলাম।’’ বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পি সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দারের কথায়, ‘‘ছোট ব্যবসায়ীরাও নিরাশ হননি। কলকাতার পাশাপাশি জেলার ছোট দোকানগুলিতেও ভাল কেনাকাটা হয়েছে।’’ বনগাঁর ব্যবসায়ী বিনয় সিংহ জানান, ‘‘গত বারের থেকে প্রায় ২৫% বেশি বিক্রি করেছি। তবে ২০১৮ বা ২০১৯ সালের জায়গায় পৌঁছতে পারিনি।’’