হার্লে ডেভিডসন মোটরবাইক।
একেবারে শূন্য হাতে হয়তো ফিরতে হবে না ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
এ যাত্রায় বাণিজ্য চুক্তি না-হলেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ভারত সফর থেকে বলার মতো কিছু যাতে ট্রাম্পের ঝুলিতে থাকে, সে জন্য মোদী সরকার তৎপর। সরকারি সূত্রের খবর, আমেরিকার দাবি মেনে হার্লে ডেভিডসন মোটরবাইকের উপর শুল্কের বোঝা অনেকটাই কমানো হতে পারে। ইতিমধ্যেই মৌখিক ভাবে মার্কিন প্রশাসনকে এ বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
হার্লে ডেভিডসনের মতো দামি বাইকের উপর আগে ১০০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসত। গত বছর ট্রাম্পের অনুরোধের পরে মোদী সরকার তা এক ধাক্কায় ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। কিন্তু ট্রাম্পের অভিযোগ, শুল্কের হার এখনও যথেষ্ট চড়া। এ বার তা আরও কমানো হলে সেটা আগামী দিনে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তির ‘অগ্রদূত’-এর কাজ করবে। তা ছাড়া, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে দেশের শিল্পমহল তথা আমজনতার কাছে বড়াইও করতে পারবেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন: এ বার ৪৩,০০০ ছুঁইছুঁই সোনা
বৃহস্পতিবারই আমেরিকার কলোরাডোতে এক জনসভায় ট্রাম্প ভারতের চড়া শুল্ক নিয়ে সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘চড়া শুল্ক বসিয়ে ওরা আমাদের বছরের পর বছর মেরে যাচ্ছে।’’ মোদীর সঙ্গে আলোচনায় তিনি যে চড়া শুল্ক নিয়ে সরব হবেন তার ইঙ্গিত দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে একটু কথা বলতে হবে। ওদের শুল্কের হার গোটা বিশ্বের মধ্যে সব থেকে বেশি।’’
হার্লে ডেভিডসন
• আমেরিকায় তৈরি দামি বাইক
• আগে শুল্কের হার ছিল ১০০ শতাংশ
• ২০১৯-এ ট্রাম্পের অনুরোধে কমিয়ে ৫০ শতাংশ
• আরও কমানোর দাবি ট্রাম্প প্রশাসনের
• ট্রাম্পের সফরে কমতে পারে শুল্ক
যদিও ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যা-ই বলুন না কেন, ভারতের আমদানি শুল্কের হার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মের মধ্যেই রয়েছে। এ কথা ঠিক যে, আমেরিকা, জাপান বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের তুলনায় ভারতের আমদানি শুল্কের হার বেশি। ২০১৮-তে এ দেশের শুল্কের গড় হার ছিল ১৭ শতাংশের আশেপাশে। যেখানে আমেরিকা, জাপানের মতো দেশে শুল্কের হার ৫ শতাংশের আশেপাশে। কিন্তু ভারতের শুল্কের হার তুরস্ক, ব্রাজিল বা মিশরের মতো উঠতি দেশগুলির মতোই। তা ছাড়া ,দেশের স্বার্থেই কিছু পণ্যে চড়া শুল্ক বসাতে হয়েছে। যেমন আমেরিকা অধিকাংশ চিনা পণ্যে বিপুল পরিমাণ শুল্ক চাপিয়েছে।
ট্রাম্পের এ বারের সফরে দু’দেশের মধ্যে যে বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে না, তা একপ্রকার নিশ্চিত। আমেরিকায় মোদীর সফরের সময়েও বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে মতপার্থক্য মেটানো যায়নি। এ বারও ডেয়ারি-জাত পণ্যের ভারতের বাজার খুলে দেওয়ার প্রশ্নে সঙ্ঘ পরিবার জেদ ধরেছে— আমেরিকার গরু নিরামিষভোজী হলে তবেই তার দুধ আমদানি করা যাবে। নচেৎ নয়।
ফলে এখনই যে বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে না, তার ইঙ্গিত দিয়ে ট্রাম্প নিজেই কলোরাডোতে বলেছেন, ‘‘আমরা একটা দারুণ বাণিজ্য চুক্তি করব। কিন্তু একটু ধীরেসুস্থে। নির্বাচনের পরে করব। আমাদের জন্য ভাল হলেই করব। কারণ আমেরিকা ফার্স্ট আমাদের নীতি। লোকে পছন্দ করুক বা না–ই করুন, আমরা আমেরিকাকেই আগে রাখব।’’