প্রতীকী ছবি।
প্যাকেটবন্দি চাল, আটা, ডাল, পনির, লস্যি, মুড়ি, মধু ইত্যাদিতে সোমবার থেকে বসেছে ৫% জিএসটি। ফলে বাড়ছে পণ্যগুলির দাম। যা নিয়ে ক্রমাগত বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ছে কেন্দ্র। সেই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় এ দিন অর্থ মন্ত্রক জানাল, ওই সব পণ্যের ২৫ কেজি বা ২৫ লিটার পর্যন্ত প্যাকেটের ক্ষেত্রেই এই কর প্রযোজ্য হবে, তার বেশি ওজনের প্যাকেটে নয়। আবার ২৫ কেজির প্যাকেট থেকে দোকানদার খুচরো ক্রেতাদের পণ্য বিক্রি করলেও বসবে না কর। যদিও এই ব্যাখ্যার পরে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের প্রশ্ন, একসঙ্গে ২৫ কেজির বেশি ওজনের পণ্য দেশের কত মানুষ কেনেন? ব্যবসায়ী মহলের অনেকের আবার মত, যে বিক্রেতা জিএসটি দিয়ে ২৫ কেজির কম প্যাকেট কিনবেন দোকান থেকে বিক্রি করবেন বলে, তিনি তো ক্রেতাদের থেকেই সেই দাম উসুল করবেন!
মন্ত্রকের প্রকাশিত প্রশ্নোত্তরে আরও বলা হয়েছে, কোনও সংস্থা ২৫ কেজির কম ওজনের পণ্যের একাধিক প্যাকেট একসঙ্গে বিক্রি করলেও জিএসটি বসবে। অর্থাৎ, ধরা যাক ১০ কেজির ১০টি প্যাকেট একসঙ্গে বিক্রি হলেও কর লাগবে। কিন্তু ৫০ কেজি চালের একটি বস্তার মতো পণ্যে দিতে হবে না পরোক্ষ কর। উল্লেখ্য, কিছু পণ্যে নতুন কর ছাড়াও, গত মাসের বৈঠকে বেশ কিছু জিনিসের ক্ষেত্রে করের হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিএসটি পরিষদ। সেই নতুন হারও এ দিন থেকে চালু হয়েছে।
এ দিকে চড়া মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে জরুরি পণ্যে নতুন করে এই কর বসানো নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে সারা দেশেই। সোমবার এ জন্য কেন্দ্রকে ফের তোপ দেগেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কলকাতায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত! হিরেতে ১.৫% জিএসটি অথচ মানুষের প্রয়োজনের পণ্যে অনেক বেশি হারে কর। দ্রবমূল্য হোক বা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, এর কোনও শেষ নেই। আগেও বলেছি, এই সরকারের আমলে এক একটা দিন দেশের জন্য ক্ষতি! আমরা সংসদে এই জিএসটি-র বিষয়টি তুলব।’’
পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি ছাড়াও কর বসানোয় আপত্তি জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজ্যের ব্যবসায়ীরা। কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড ফেডারেশন্সের সভাপতি সুশীল পোদ্দার বলেন “কিছু খাদ্যপণ্যে নতুন করে কর বসানো মানা যায় না। যে ভাবে কর আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাতে দুর্নীতি বাড়তে পারে।’’ দিল্লির চেম্বার অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান ব্রিজেশ গোয়েল এই সিদ্ধান্তকে জনবিরোধী জানিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি করেছেন।