প্রথমে নোট বাতিল। তার পরে জিএসটি। দুইয়ের জেরে ধাক্কা খেয়েছিল যে সব শিল্প, তার মধ্যে প্রথম সারিতে আবাসন। যে কারণে মোদী সরকারের উপরে ফ্ল্যাট-বাড়ির নির্মাতাদের ক্ষোভও জমেছিল বিস্তর। রবিবার তাতেই জল ঢালার চেষ্টা করল জিএসটি পরিষদ। আবাসনে জিএসটি কমানোর সুপারিশ করে। আর সাধারণ রোজগেরের সাধ্যের মধ্যে থাকা বা কম দামের (অ্যাফর্ডেবল) ফ্ল্যাট-বাড়ির সংজ্ঞা বদলে দিয়ে। যাকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্প মহল। তাদের আশা, এই সিদ্ধান্ত জেল্লা ফেরাবে পড়ে থাকা ফ্ল্যাট-বাড়ি নিয়ে নাস্তানাবুদ নির্মাতাদের ব্যবসায়।
এর আগে এই শিল্পকে বিক্রির খরা থেকে বার বার বাঁচিয়েছে কম দামি আবাসন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, জিএসটির জন্য সেগুলির টানও কমেছে। তবে তাতে জিএসটি ১ শতাংশে নামলে হারানো জেল্লা ফের ফিরবে বলে আশায় বুক বাঁধছে শিল্প।
বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, এই উদ্যোগ ব্যালট বাক্সে চোখ রেখেই। তবে শিল্পের দাবি, জিএসটির চাপ কমলে বাড়তে পারে বিক্রি। বিশেষত যে সময় দেশে বহু ফ্ল্যাট-বাড়ি বিক্রি না হয়ে পড়ে রয়েছে। তবে একাংশের প্রশ্ন, কাঁচামালে মেটানো কর ফেরতের সুবিধা (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট) উঠে গেলে ফল উল্টো হবে না তো? বেড়ে যাবে না তো দাম?
ব্যালট-যুদ্ধ জিততে সকলের জন্য ছাদের স্বপ্ন ফেরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আবাসন শিল্পের মতে, এই পথে বাধা হচ্ছিল চড়া জিএসটি। তা দূর করতে কম দামের নির্মীয়মাণ বাড়ির জিএসটি কমানোয় খুশি নির্মাণ সংস্থাদের সংগঠন ক্রেডাই। সংগঠনের প্রধান জকশে শাহ বলেন, ‘‘সকলের জন্য বাড়ি তৈরির লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ চাঙ্গা করবে আবাসনের বাজার।’’
ইনপুট ক্রেডিটের সুবিধা তুলে নেওয়ায় প্রথমে চাপে পড়লেও, আখেরে ডেভেলপারদের লাভই হবে, দাবি ক্রেডাই বেঙ্গলের প্রেসিডেন্ট নন্দু বেলানির। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বর্গ ফুট তৈরির খরচ ২০০-৩০০ টাকা বাড়বে। কিন্তু বিক্রি বাড়লে তা পুষিয়ে যাবে।’’ ক্রেডাই সদস্য সঞ্জয় জৈন বলেন, ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিটের সুবিধা ক্রেতাকে দেওয়া হচ্ছে না বলে ডেভেলপারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল মাঝে মাঝেই। এ দিনের সিদ্ধান্ত ক্রেতার আস্থা ফেরাবে।
আবাসনের বাজার যে তলানি ছুঁয়েছে, তা জানিয়েছে একাধিক সমীক্ষা। নাইট ফ্র্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮-তে বিক্রি কমেছে ১০%। এখন কর ছাড়ই ছবিটা পাল্টাতে পারে বলে অভিমত সংস্থার মুখপাত্র অরবিন্দ নন্দনের।