Green Hydrogen

জমি-বিদ্যুতের শুল্কে ছাড় গ্রিন হাইড্রোজেন নীতিতে

পশ্চিমবঙ্গে ‘নোডাল এজেন্সি’ হিসেবে গ্রিন হাইড্রোজেন নীতি তৈরি করেছে বিদ্যুৎ দফতর। সেখানে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের সুবিধার বাইরে রাজ্যও আলাদা ভাবে বিভিন্ন আর্থিক সহায়তা দেবে।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

পরিবেশবান্ধব জ্বালানির গুরুত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সারা বিশ্বে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে গ্রিন হাইড্রোজেন। ভারতের হাতেগোনা যে কয়েকটি রাজ্য এখন সেই দৌড়ে রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ তাদের অন্যতম। সম্প্রতি ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজ়নেস সামিটে’ (বিজিবিএস) নির্দিষ্ট গ্রিন হাইড্রোজেন নীতি ঘোষণা করেছে রাজ্য। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে সেই নীতির সরকারি বিজ্ঞপ্তি (গেজেট) প্রকাশিত হবে। তার পর থেকে তা পাঁচ বছর কার্যকর থাকবে। গ্রিন হাইড্রোজেন এবং তা থেকে তৈরি অ্যামোনিয়া (যা সার তৈরির উপাদান) উৎপাদনের ক্ষেত্রে একগুচ্ছ আর্থিক সুবিধার সুপারিশ করা হয়েছে ওই নীতিতে।

Advertisement

এখন যে হাইড্রোজেন উৎপাদন হয়, তা মূলত তৈরি হয় জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। ফলে হাইড্রোজেন বিশুদ্ধ জ্বালানি হলেও তার উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কার্বন নিঃসরণ হয়। কিন্তু বিকল্প বিদ্যুতের সাহায্যে জলের তড়িৎ-বিশ্লেষণ (ইলেকট্রোলিসিস) করে বা বায়োমাস থেকে যে হাইড্রোজেন তৈরি হয় তা দূষণহীন। সেটিকেই বলা হয় গ্রিন হাইড্রোজেন। যা ইস্পাত বা অ্যামোনিয়া উৎপাদন, অশোধিত তেলের শোধন এবং মিথানল উৎপাদনের জরুরি উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি উৎপাদনের জন্য যে বিশেষ যন্ত্রের (ইলেকট্রোলাইজ়ার) প্রয়োজন হয়, গ্রিন হাইড্রোজেনের পাশাপাশি সেটি তৈরিতেও উৎসাহ দিতে গত ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নীতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই গ্রিন হাইড্রোজেন ক্ষেত্রে লগ্নির বার্তা দিয়েছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়, আদানি গোষ্ঠী প্রমুখ। জাতীয় নীতিতেও আর্থিক-সহ নানা সুবিধা রয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে ‘নোডাল এজেন্সি’ হিসেবে গ্রিন হাইড্রোজেন নীতি তৈরি করেছে বিদ্যুৎ দফতর। সেখানে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের সুবিধার বাইরে রাজ্যও আলাদা ভাবে বিভিন্ন আর্থিক সহায়তা দেবে। যেমন, নীতির মেয়াদকালের মধ্যে এই প্রকল্পে যারা লগ্নি করবে তারা সংশ্লিষ্ট জমির চরিত্র বদলের জন্য দেয় কর এবং জমির মিউটেশন ফি-তে ১০০% ছাড় পাবে। পুরো ছাড় মিলবে স্ট্যাম্প ডিউটি ও জমির রেজিস্ট্রেশন খাতেও। বিদ্যুতের ডিউটি খাতেও মিলবে ১০০% ছাড়। ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এবং জলের জোগান নিশ্চিত করা হবে। ‘শিল্পসাথি’ পোর্টালের মাধ্যমে এক জানলা ব্যবস্থায় পাওয়া যাবে সমস্ত ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’, অনুমোদন ও ছাড়পত্র।

Advertisement

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া আপাতত মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশ (খসড়া) গ্রিন হাইড্রোজেন নীতি তৈরি করেছে। দফতরের বক্তব্য, কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে এই গ্যাস। তাই এখন থেকে প্রস্তুতি নিলে লগ্নি পাওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে যাবে এ রাজ্য। এ জন্য রাজ্যের পরিত্যক্ত কয়লা খনি এলাকাগুলি উপযুক্ত হতে পারে। নীতি তৈরি হওয়ায় এই সংক্রান্ত বিষয়গুলি দ্রুত যাচাই করা সহজ হবে। এখন রাজ্যে রান্না, গাড়ি ও শিল্পের জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার শুরু হয়েছে। দফতর সূত্রের দাবি, ভবিষ্যতে এ ক্ষেত্রে গ্রিন হাইড্রোজেনও ব্যবহার করা যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement