প্রতীকী চিত্র
সীমান্তে সংঘর্ষের দু’দিনের মধ্যে বিএসএনএল এবং এমটিএনএল-কে চিনা সংস্থার যন্ত্রাংশ ব্যবহার না-করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। দেশের বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলিকেও সেই অনুরোধ করতে পারে তারা। টেলিকম শিল্প বলছে, এ নিয়ে আইন হলে তারা মানতে বাধ্য। তবে ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার সঙ্গে বাণিজ্যিক বিষয়কে মিশিয়ে ফেলা উচিত নয় বলে মনে করে তাদের সংগঠন সিওএআই। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছ, ভারতে চিনা মোবাইল সংস্থাগুলির ভবিষ্যৎ নিয়েও।
সিওএআইয়ের ডিজি রাজন ম্যাথুজ়ের বক্তব্য, ‘‘দেশের পক্ষে কোনটা ভাল তা খতিয়ে দেখে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়। তেমনই গ্রাহক ও অংশীদারদের কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় সংস্থাকে। তাই ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা ও বাণিজ্যিক বিষয় একসঙ্গে মেশানো ঠিক নয়। তবে আইন এলে মানতে হবে।’’
চিনা পণ্য বয়কটের আবহে এ দিন পড়শি মুলুকের মোবাইল সংস্থা ওপো ইউটিউবে তাদের ৫জি স্মার্টফোন বাজারে আনার সরাসরি সম্প্রচার বাতিল করেছে। কিন্তু হিসেব বলছে, ভারতের মোবাইল ফোনের বাজারে প্রথম পাঁচটি সংস্থার চারটিই চিনা। গত জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে আমদানি হওয়া স্মার্টফোনের ৭৬% তাদের দখলে। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, এই বিপুল প্রবাহ আটকানো কঠিন নয় কি?
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, চিনা সংস্থা জ়েডটিই ও হুয়েইয়ের পাশাপাশি ভারতে টেলিকম পরিষেবা সংস্থাগুলিকে যন্ত্রাংশ জোগান দেয় নোকিয়া, এরিকসন, স্যামসাংও। ইন্ডিয়ান সেলুলার অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান পঙ্কজ মহিন্দ্রু বলছেন, যন্ত্রাংশের বড় অংশ চিন থেকেই আসে। তবে আত্মনির্ভরতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। শিল্পের একাংশের প্রশ্ন, তার প্রয়োজন থাকলেও, সেই ভিত তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত তড়িঘড়ি চিনা আমদানি বন্ধ
করা যায় কি?
টেলি শিল্পের একাংশের প্রশ্ন, নতুন চিনা সংস্থার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা চালু হলে এখন চালু চিনা সংস্থার যন্ত্রাংশগুলির রক্ষণাবেক্ষণে প্রভাব পড়বে না তো? সেগুলি সব বদলাতে হলে তা যেমন বিপুল লগ্নি সাপেক্ষ, তেমন সময়ও লাগবে। আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত এই শিল্পের কি নতুন করে আরও দায় নেওয়া সম্ভব? যদিও ম্যাথুজ আশাবাদী, সরকার তা বলবে না। তবে শীঘ্রই যে ৫জি সংযোগের পরিষেবা পরীক্ষামূলক ভাবে চালুর কথা জানিয়েছিল কেন্দ্র, সে জন্য কয়েকটি সংস্থা কাজ এগিয়েছে। তাদেরও কিছু চিনা যন্ত্রাংশ ব্যবহারের কথা থাকায়, সব মিলিয়ে আশঙ্কার কালো মেঘ।