ছবি সংগৃহীত।
করোনার ধাক্কা যে লাগবে, জানাই ছিল। কিন্তু তার মাত্রা কতটা হবে, সেটা দেখার অপেক্ষায় ছিল সারা বিশ্ব। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার মিলিয়ে যখন বিভিন্ন দেশ যখন নিজেদের এপ্রিল-জুনের জিডিপির পরিসংখ্যান প্রকাশ করল, দেখা গেল আমেরিকা, জার্মানি বা স্পেনের মতো কারও ক্ষেত্রে তা কমার হার ইতিহাসে সর্বাধিক। আবার ইটালির ক্ষেত্রে মুছে গিয়েছে প্রায় ৩০ বছরের বৃদ্ধিই।
করোনা যুঝতে জানুয়ারি থেকেই প্রায় লকডাউনে মুড়ে ফেলা হয়েছিল চিনকে। তার পরে সেই সংক্রমণ ছড়িয়ে গিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। যার জেরে মোটামুটি ভাবে মার্চের মাঝামাঝি থেকে প্রায় সব দেশেই বন্ধ ছিল আর্থিক কর্মকাণ্ড। বিশেষত স্পেন, ইটালি, ফ্রান্সের মতো ইউরোপীয় দেশে সংক্রমণ যত ছড়িয়েছে, ততই ঘরবন্দি হয়েছেন মানুষ। সব মিলিয়ে প্রায় তিন মাস। যে কারণে এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিকের পুরোটা জুড়েই ধাক্কা খেয়েছে আমদানি-রফতানি, কল-কারখানায় উৎপাদন। মুখ থুবড়ে পড়েছে বছরভর পর্যটক টানা দেশগুলির হোটেল, পর্যটন, বিমান, রেস্তরাঁ পরিষেবা। যার জেরে ফ্রান্সের জিডিপি নেমেছে প্রায় ১৪%, ইটালির ১২.৪%, স্পেনের ১৮.৫% এবং ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি জার্মানির ১০.১%। আর ১৯টি দেশের ইউরোপীয় অঞ্চল (যাদের মুদ্রা ইউরো) ধরলে সেই অঙ্ক ১১.৯%। ২৭ দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতি কমেছে ১২ শতাংশের বেশি।
আবার আমেরিকায় জানুয়ারি-মার্চেই ধাক্কা খেয়েছিল অর্থনীতি। তা কমেছিল ৫%। তার পরেই করোনার হানায় গত বছরের এপ্রিল থেকে জুনের তুলনায় এ বছর ওই তিন মাসে তা তলিয়ে গিয়েছে ৩৩.৯%। এর আগে ১৯৫৮ সালে জিডিপি কমেছিল ১০ শতাংশের বেশি। সেটাই ছিল রেকর্ড। নিজের সাফল্য হিসেবে বরাবরই অর্থনীতির উজ্জ্বল ছবি তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু মার্চ থেকে প্রায় প্রতি সপ্তাহে ১০ লক্ষের বেশি কাজ হারানো মানুষ এবং অর্থনীতির এই পতন নভেম্বরের নির্বাচনের আগে তাঁর কপালে ভাঁজ আরও গভীর করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এখন অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে ত্রাণের সুফল দেখার অপেক্ষায় সকলে।