চলতি সঙ্কটের জেরে আগামী অর্থবর্ষে আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছাঁটাই করছে আদানিরা। ফাইল চিত্র।
সপ্তাহের শুরুতেও আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারদরে রক্তক্ষরণ অব্যাহত। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশের পর গত মাসের শেষ থেকে শেয়ার বাজারে আদানিদের নথিভুক্ত সাতটি সংস্থার মোট শেয়ার মূল্য অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় লগ্নিকারীদের আশ্বস্ত করতে সোমবার আদানিরা দাবি করল, তাদের হিসাবের খাতা (ব্যালান্স শিট) যথেষ্ট পোক্ত। ব্যবসা বিস্তারের পরিকল্পনা অটুট। তার জন্য অর্থের সংস্থানও করা আছে। শেয়ারহোল্ডারদের রিটার্ন দেওয়ার বিষয়েও তারা আত্মবিশ্বাসী। সংস্থা পরিচালনার বিষয়গুলি কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে মেনে চলেন বলেও দাবি তাদের।
সম্প্রতি বিভিন্ন সূত্রকে উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমের খবর, চলতি সঙ্কটের জেরে আগামী অর্থবর্ষে আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছাঁটাই করছে আদানিরা। স্থগিত রাখা হচ্ছে নতুন পুঁজি লগ্নিও। এই প্রেক্ষিতেই এ দিন নিজেদের বক্তব্য জানাল আদানি গোষ্ঠী।
এ দিন আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের শেয়ার দর ৭.০৩% পড়েছে। আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকনমিক জ়োন (৫.২৫%), অম্বুজা সিমেন্ট (৫.১৭%), এসিসির (৩.০৬%) পাশাপাশি আদানি উইলমার ও এনডিটিভির দর পড়েছে ৫% করে। নেমেছে আদানি পাওয়ার-ও। আর গত ৫২ সপ্তাহের মধ্যে সব চেয়ে নীচে নেমেছে আদানি ট্রান্সমিশন, আদানি গ্রিন এনার্জি এবং আদানি টোটাল গ্যাসের শেয়ার দর।
অন্য দিকে, এ দিন লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভাগবত কারাড জানান, আদানিদের সংস্থাগুলিতে পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত সাধারণবিমা সংস্থা মোট ৩৪৭.৬৪ কোটি টাকা ঢেলেছে। যা মোট লগ্নির ০.১৪%। সংস্থাগুলি হল ন্যাশনাল ইনশিয়োরেন্স, নিউ ইন্ডিয়া অ্যাশিয়োরেন্স, ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইনশিয়োরেন্স, ওরিয়েন্টাল ইনশিয়োরেন্স ও জেনারাল ইনশিয়োরেন্স কর্পোরেশন)। আর এলআইসি ঢেলেছে ৩৫,৯১৭.৩১ কোটি। মোট লগ্নির ০.৯৭৫%। এলআইসি অবশ্য সেই হিসাব (২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত) আগেই জানিয়েছে। তবে স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন ব্যাঙ্ক আদানি গোষ্ঠীকে কত ঋণ দিয়েছে, সেই প্রশ্নের জবাবে কারাডের যুক্তি, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের আইন অনুযায়ী ব্যাঙ্ক বা আর্থিক সংস্থা কাকে কত ঋণ দিয়েছে, তা সাধারণের কাছে প্রকাশ করায় বিধিনিষেধ রয়েছে। টুইটারে কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারির কটাক্ষ, মন্ত্রী শীর্ষ ব্যাঙ্ককে ঢাল করে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। লগ্নির তথ্যে শুধু শতাংশের হিসাব না দেখিয়ে আর্থিক হিসাবও দেখানো উচিত।
এ দিকে এলআইসি জানিয়েছে, শীঘ্রই তারা আদানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। আশা, তার পরেই পুরো বিষয়টি নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হবে। তার ভিত্তিতে ওই গোষ্ঠীতে লগ্নির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।