আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জ়োন লিমিটেডের ১৬ কোটি ৮২ লক্ষ ৭০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ১২ শতাংশ) বাজারে আনতে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। ফাইল চিত্র ।
তিন সংস্থার আরও শেয়ার বাজারে আনতে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। মালিকাধীন বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারে ধস নামার মধ্যেই আদানি গোষ্ঠী এই নতুন ঘোষণা করল। বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জ়োন লিমিটেডের ১৬ কোটি ৮২ লক্ষ ৭০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ১২ শতাংশ), আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের ২ কোটি ৭৫ লক্ষ ৬০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ৩ শতাংশ) এবং আদানি ট্রান্সমিশন লিমিটেডের ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৭০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ১.৪ শতাংশ) বাজারে আনতে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। যথা সময়ে সেই শেয়ারগুলি বাজারে আনতে অঙ্গীকারবদ্ধ তারা। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই।
আমরিকার শেয়ার সংক্রান্ত সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের মূল্য অনেক কমে গিয়েছে। কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থা। তার মধ্যেই গত বুধবার কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের দিনেই নতুন শেয়ার ছাড়ার প্রক্রিয়া (এফপিও) বাতিল করে দেয় আদানি গোষ্ঠী। ২০ হাজার কোটি টাকার ওই এফপিও বাতিলের পর তাদের শেয়ারের দর আরও নেমে যায়। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে হঠাৎ করে কেন নতুন করে বাজারে শেয়ার ছাড়ছে আদানিরা?
শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নিজেদের অর্থনৈতিক ভাবে সবল দেখাতে এবং শেয়ারের দরে ‘রক্তক্ষরণ’ কমাতেই এই সিদ্ধান্ত। অতীতে এই শেয়ারগুলির পরিবর্তে বাজার থেকে টাকা ঋণ নিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। সেই ঋণ পরিশোধের সময় ছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু ২০২৩ সালের জানুয়ারিতেই আগাম সেই বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। ফেরত পেয়েছে বন্ধক থাকা শেয়ারগুলি। সেই শেয়ারগুলিই বাজারে আনতে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। সময়ের আগে টাকা মিটিয়ে আটকে থাকা শেয়ারগুলির মালিকানা ফেরত পাওয়ার কথা বিবৃতিতে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে আদানিদের তরফে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের অভিযোগের পর আদানিদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। সংস্থা ক্ষতির মুখে পড়ার পর আদানিরা আর্থিক ভাবে স্থিতিশীল কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল। কিন্তু সময়ের আগে বকেয়া মিটিয়ে বন্ধক শেয়ারগুলির মালিকানা ফেরত পেয়ে নিজেদের আর্থিক ভাবে সবল বলে দেখাতে চাইছে আদানিরা।
পাশাপাশি, এই শেয়ারগুলি নিজেদের হাতে ফেরত পাওয়ার এক অর্থ এ-ও যে, সংস্থাগুলির শেয়ারে যে ভাঙন ধরেছে, তা-ও খানিকটা রোধ করতে পারবে আদানি গোষ্ঠী। বর্তমানে আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেডের শেয়ার মূল্য ১০ শতাংশ বেড়ে থাকলেও বেহাল অবস্থা আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের। এই সংস্থার শেয়ারের বাজারদর ৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। আরও শোচনীয় অবস্থা হয়েছে আদানি ট্রান্সমিশন লিমিটেডের। তাদের শেয়ারের মূল্য ধসেছে প্রায় ১০ শতাংশ। শেয়ারগুলি ফেরত পাওয়ার পর শেয়ারের পতনের গতি একটু কমতে পারে। আর সেই আশাতেই তড়িঘড়ি বকেয়া টাকা মিটিয়ে শেয়ারগুলি নিজেদের কাছে ফিরিয়ে এনেছে আদানিরা।