গত ২৫ দিনে শেয়ার বাজারে নিজেদের উত্থানের কম চেষ্টা করেনি আদানিরা। ফাইল চিত্র।
ধনকুবেরদের তালিকায় ক্রমশই নীচের দিকে নামছেন গৌতম আদানি। একদা অম্বানীদের টপকে বিশ্ব ধনী তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করেছিলেন এই ভারতীয় ধনকুবের। গত ২৫ দিনে সেই সিংহাসন ধসে পড়েছে। আদানিরা আর ধনী তালিকায় প্রথম দশেও নেই। রবিবার প্রকাশিত বিশ্ব ধনী তালিকায় দেখা যাচ্ছে, আদানিরা নেমে এসেছে ২৪ নম্বরে।
গত ২৫ জানুয়ারি ফোর্বস পত্রিকার ধনী তালিকায় আদানিরা ছিলেন বিশ্বের তৃতীয় ধনকুবের। ব্লুমবার্গের বিলিওনেয়ার ইনডেক্সও বলছে, ২৫ তারিখ বিকেল ৫টার সময় আদানির সম্পদের মূল্য ছিল ১১৯ বিলিয়ন অর্থাৎ ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। এর পর প্রকাশিত হয় আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিসার্চের সেই বিতর্কিত রিপোর্ট। যেখানে আদানিদের বিরুদ্ধে কারচুপি করে শেয়ারের দাম বাড়ানোর অভিযোগ আনে সংস্থাটি। এর পরেই শুরু হয় আদানিদের শেয়ারদরে রেকর্ড পতন। যা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও টোটকাই আর কাজে লাগছে না আদানিদের। ফলে গত ২৫ দিনে আদানিদের সম্পদ এক ধাক্কায় অর্ধেকেরও বেশি কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার কোটি ডলারের নীচে। রবিবার সকালে ফোর্বস পত্রিকার ধনী তালিকার তথ্য অনুযায়ী আদানির সম্পদমূল্য এসে ঠেকেছে ৪ হাজার ৯৭০ কোটি ডলারে। স্বাভাবিক ভাবেই এর প্রভাব পড়েছে বিশ্বের ধনী তালিকায় আদানিদের স্থানেও।
গত ২৫ দিনে শেয়ার বাজারে নিজেদের উত্থানের কম চেষ্টা করেনি আদানিরা। ঋণ শোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ঋণের একাংশ শোধও করেছেন। এর পাশাপাশি প্রকাশ্যে এনেছেন গত তিন মাসের লাভের খাতার হিসাব। শেষে স্বয়ং আদানি আশ্বাসবাণী দিয়েছেন। নানা যুক্তি দেখিয়ে নস্যাৎ করেছেন আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। মাঝে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দর সামান্য বাড়লেও, তার পর থেকে তা আবার নিম্নমুখী হয়েছে।
মূলত সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার ব্যবসায় যুক্ত আদানিরা ১৯৮০ সাল থেকে রয়েছেন ব্যবসায়। যদিও ৩ বছর আগেও আদানিদের সম্পত্তির মূল্য ছিল ৮৯০ কোটি ডলার। কিন্তু তার পর উল্কার গতিতে উত্থান হয় তাঁদের। ২০২১ সালে আদানিদের সম্পদের মোট মূল্য পৌঁছেছিল চার হাজার কোটি ডলারে। পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায় এই সম্পদ। ৮ হাজার ৮৫০ কোটি ডলার মূল্যের সম্পদের মালিক আদানি প্রথমে এশিয়ার তৃতীয় শীর্ষ ধনী হন। তার পর বিশ্বের ধনী তালিকাতেও ৩ নম্বরে উঠে আসেন। তবে উল্কার গতিতে উত্থান হওয়া আদানিদের পতনও একইগতি শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।