গত বছরের জি২০ সম্মেলন। —ফাইল চিত্র।
গত বছরের জি২০ সম্মেলনের দায়িত্বে থাকা ভারতকে লগ্নির আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরতে কসুর করেনি মোদী সরকার। তাদের দাবি, এ দেশে উন্নত হয়েছে ব্যবসার পরিবেশ। বিদেশি সংস্থাগুলিকে তাই ভারতে লগ্নিতে আহ্বান জানিয়েছিল তারা। অথচ রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ফেব্রুয়ারির বুলেটিন বলছে, বৃদ্ধি তো দূর অস্ত্, নিট হিসাবে গত বছর এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরে ভারতে ৫৫ শতাংশেরও বেশি মাথা নামিয়েছে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি (এফডিআই)। ২০২২ সালের এই সময়ে যেখানে এসেছিল ২১৬৩ কোটি ডলার। সেটাই এই অর্থবর্ষের প্রথম ন’মাসে দাঁড়িয়েছে ৯৬৯ কোটি ডলারে। মূলত বিদেশি লগ্নিকারীরা এখান থেকে পুঁজি তুলে নেওয়াই যার কারণ। যার অঙ্ক পৌঁছেছে ৯৫০ কোটি ডলারের বেশি বেড়ে পৌঁছেছে ৩২২৬ কোটিতে। এফডিআই কমা নিয়ে কেন্দ্রকে বুধবার তোপ দেগেছে বিরোধী কংগ্রেস। ওই তথ্য তুলে ধরে এক্সে দলের নেতা গৌরব গগৈ-এর দাবি, বিজেপি সরকার অর্থনীতির অবস্থা ভাল বলে দাবি করলেও, পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা।
অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্কে শীর্ষ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুসারে, এপ্রিল-ডিসেম্বরে প্রত্যক্ষ ভাবে ১৯২৩ কোটি ডলার ঢেলেছে বিদেশি লগ্নিকারীরা। তারা ফিরিয়েছে ৯৫৪ কোটি। সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা গিয়েছে উৎপাদন, বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য জ্বালানি ক্ষেত্র, পরিবহণ, আর্থিক পরিষেবা, রিটেল ও পাইকারি ক্ষেত্রে। বিশ্বে ক্রমশ যে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ছে এবং সংস্থাগুলিও তাতে এগিয়ে আসছে, সেই কথা প্রমাণ করে তার মধ্যে আবার প্রথমে জায়গা করে নিয়েছে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি। সেই সঙ্গে রয়েছে ডিজিটাল ক্ষেত্র। ৭৫ শতাংশের বেশি লগ্নি এসেছে সিঙ্গাপুর, মরিশাস, আমেরিকা, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও নেদারল্যান্ডস থেকে।
ভারত যে বিদেশি লগ্নির অন্যতম গন্তব্য, তা নিয়ে অবশ্য দ্বিমত নেই বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। যাঁদের মতে, এ বছরেও সেই ধারা বহাল থাকার সম্ভাবনা। বিশেষত ডিজিটাল ক্ষেত্রে ভারতে ডেটা সেন্টার তৈরিতে জোর দিচ্ছে বহু সংস্থা। যা এখানে বিদেশি পুঁজিকে টেনে আনছে। কেন্দ্রও চাইছে ভারতকে ডেটা সেন্টারের হাব হিসেবে গড়ে তুলতে। তবে বিশ্বে ভূ-রাজনৈতিক টানাপড়েন, অর্থনীতি নিয়ে দোলাচল, পুঁজি জোগাড়ের খরচ কমা ও মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামানোর হাত ধরে ২০২৪ সালে এফডিআই বৃদ্ধির হার মাথা নামাতে পারে বলে সতর্ক করেছে আরবিআই।