চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার নেমেছে ৪.৭ শতাংশে। গত শুক্রবার এই পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আসার পরে অর্থ মন্ত্রক বলেছিল, অর্থনীতির হাল আর নতুন করে খারাপ হবে না। এ বার তা ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। যদিও সোমবার মূল্যায়ন সংস্থা ফিচের সমীক্ষা বলেছে, সেই আশা করার সময় এখনও আসেনি। দেশে চাহিদা গোঁত্তা খাওয়া এবং চিনে করোনাভাইরাসের দাপটে কাঁচামালের জোগানে ধাক্কা লাগার বিরূপ প্রভাব সম্ভবত চলতি অর্থবর্ষে কাটিয়ে ওঠা যাবে না।
একই দিনে আগামী অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই করেছে অর্গানাইজেশন ফর ইকনমিক কোঅপরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)। তার জন্যও করোনার প্রভাবের কথাই বলেছে তারা। অন্য এক সমীক্ষা দেশের উৎপাদন ক্ষেত্রের কার্যকলাপে গতি কমার ইঙ্গিতও দিয়েছে। করোনার প্রভাবে চলতি ত্রৈমাসিকে বিশ্বের বৃদ্ধি সরাসরি কমার ইঙ্গিতও দিয়েছে তারা।
এ দিন ফিচ তাদের সমীক্ষা রিপোর্টে জানিয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির হার হতে পারে ৪.৯%। ২০২০-২১ সালে তা কিছুটা বেড়ে ৫.৪ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে। এর আগে এই দুই অর্থবর্ষের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল যথাক্রমে ৫.১% এবং ৫.৯%। পাশপাশি, ওইসিডি ২০২০-২১ অর্থবর্ষের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.২% থেকে কমিয়ে ৫.১% করেছে।
সম্প্রতি প্রথম দুই ত্রৈমাসিকের বৃদ্ধির সংশোধিত হার প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। তা বেড়ে হয়েছে ৫.৬% এবং ৫.১%। সেই অর্থে তৃতীয় ত্রৈমাসিকেও বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী। দুই সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী ওই গতিতে উন্নতির তেমন লক্ষণ নেই। চাহিদা কমা, সরকারের চেষ্টা সত্ত্বেও ঋণ বৃদ্ধি এখনও গতি না-পাওয়া, করোনার প্রভাবে কাঁচামালের সরবরাহে টান পড়া এবং তার ফলে উৎপাদন ক্ষেত্র ধাক্কা খাওয়া— এই সবই কাজ করছে এর পিছনে।
এ দিনই দেশের কলকারখানায় উৎপাদন কার্যকলাপের গতি কমার ইঙ্গিত দিয়েছে আইএইচএস মার্কিট ইন্ডিয়া ম্যানুফ্যাকচারিং পার্চেসিং ম্যানেজার্স ইন্ডেক্সে। জানুয়ারিতে তা ৫৫.৩ ছোঁয়ার পরে ফেব্রুয়ারিতে তা হয়েছে ৫৪.৫। এ ক্ষেত্রেও কারণ সেই এক। চাহিদা কমা ও তার জেরে উৎপাদন ধাক্কা খাওয়া। করোনার প্রভাবে চিনের ওই উৎপাদন সূচক বিপুল ভাবে ধাক্কা খেয়েছে। কাইজিং মার্কিট ম্যানুফ্যাকচারিং পার্চেসিং ম্যানেজার্স ইন্ডেক্স জানুয়ারির ৫১.১ থেকে কমে হয়েছে ৪০.৩।