প্রতীকী চিত্র।
গত অর্থবর্ষে অতিমারির ধাক্কায় ভারতের জিডিপি ৭.৩% কমার সরকারি পরিসংখ্যান এসেছে সোমবার। আর মঙ্গলবারই বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং গবেষণা সংস্থা জানাল, করোনা যুঝতে যে ভাবে বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউন চলছে, তাতে চলতি ২০২১-২২ অর্থবর্ষেও তার তুলনায় খুব একটা ভাল বৃদ্ধির মুখ দেখবে না দেশের অর্থনীতি। দুই অঙ্কের বৃদ্ধি তো নয়ই। স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখার ধারণা, এই বছরে বৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৭.৯%। এখনও পর্যন্ত যে কোনও পূর্বাভাসের মধ্যে যা সব চেয়ে কম। তাদের মতে, গত অর্থবর্ষের নিচু ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে এই হার মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়।
তার উপরে রেটিং সংস্থা মুডি’জ় এর আগেই ৯.৩% বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। মঙ্গলবার তাদের মতে, আংশিক লকডাউনে জুন ত্রৈমাসিকে ফের ধাক্কা খেতে পারে আর্থিক কর্মকাণ্ড। রাজস্ব কম আদায় হওয়া, খরচ বৃদ্ধির হাত জেরে কেন্দ্রকে বেশি করে ঋণ নিতে হবে। যার অঙ্ক দাঁড়াতে পারে ৯০.৩%। মুডি’জ়ের মতে, সব মিলিয়ে রাজকোষ ঘাটতি হতে পারে জিডিপি-র ১১.৮%। তা হলে ফের ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে ভারতের ক্রেডিট রেটিং। ইতিমধ্যেই যা ‘Baa3’-তে বেঁধে রেখেছে তারা। নিয়েছে অর্থনীতি সম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিও। তবে সরকারের সংস্কারের পদক্ষেপ কার্যকর হলে এবং টিকাকরণ ঠিক মতো হলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে ধারণা তাদের।
দ্বিতীয় দফায় দেশের গ্রামাঞ্চলে করোনার প্রভাব নিয়ে সতর্ক করেছে বিভিন্ন মহল। স্টেট ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদদেরও মতে, গ্রামে জমে থাকা চাহিদা সে ভাবে মাথা না-তোলার প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে। বিশেষত গুজরাত, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, কেরল, রাজস্থান ও উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যের ছোট শহরাঞ্চলে ধাক্কা লেগেছে বেশি। যার জেরে পড়বে জিডিপি-তে। তাঁদের সতর্কবার্তা, মূলত করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, আন্তর্জাতিক বাজারে দর বৃদ্ধি, আতিথেয়তা শিল্প এবং যোগাযোগ, বাণিজ্যের মতো ক্ষেত্রে ধীর গতিই অর্থনীতিকে চাপে রাখবে।
তবে কেন্দ্রের লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে যদি জুলাইয়ের মাঝামাঝি গিয়ে দিনে এক কোটি প্রতিষেধক দেওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে অর্থনীতি কিছুটা ভাল জায়গায় থাকবে বলে জানিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্কের রিপোর্টও। সব মিলিয়ে এই অর্থবর্ষে জিডিপি-র মাপ ১৪৫.৮ লক্ষ কোটি টাকায় দাঁড়াবে বলে তাদের ধারণা।