এক দিকে ইনফোসিসের সিইও বিশাল সিক্কার পদত্যাগ। আর অন্য দিকে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রি। দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে শুক্রবার সেনসেক্স এক ধাক্কায় পড়ল ২৭০.৭৮ পয়েন্ট। দাঁড়াল ৩১,৫২৪.৬৮ অঙ্কে। নিফ্টি ৬৬.৭৫ নেমে থিতু হয়েছে ৯,৮৩৭.৪০ অঙ্কে। এর আগে টানা তিন দিনে সেনসেক্স বেড়েছিল ৫৮১.৮৭ পয়েন্ট।
গুরুত্বের নিরিখে সূচকের তালিকায় থাকা সংস্থাগুলির মধ্যে ইনফোসিসের জায়গা (ওয়েটেজ) উপরের দিকে। তাই এ ধরনের সংস্থার শেয়ার দর পড়লে দ্রুত নেমে আসে সূচকের পারা। এ দিন ঠিক সেটাই ঘটেছে। যদিও সংস্থা জানিয়েছে, বাজার থেকে নিজেদের ১৩ হাজার কোটি টাকার শেয়ার কেনার যে প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে, তা ব্যাহত হবে না। এ নিয়ে বৈঠক আগামী কাল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনিতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এইচ-১বি ভিসা নীতি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির স্বার্থ বিরোধী হওয়ায় ইনফোসিস শেয়ারের চাহিদা আগের থেকে কমেছে। কারণ সকলেরই আশঙ্কা, ওই নীতির দৌলতে ভারতের মতো দেশ থেকে আমেরিকায় কর্মী নিয়ে গিয়ে কম খরচে কাজ করানোর পথ বন্ধ হলে ভুগবে তাদের ব্যবসা। তার উপর সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তির সঙ্গে বিবাদের জেরে এ দিন সিক্কা আচমকাই পদত্যাগ করায় সংস্থার পরিচালনা নিয়ে আস্থা আরও টলে যায় লগ্নিকারীদের। ফলে বিএসই-তে প্রায় ১০% পড়ে ইনফোসিসের শেয়ার দর।
বাজারের পতনের আর একটি কারণ অবশ্য ছিল বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রি। এ দিন ২,১৮২ কোটি টাকার শেয়ার বেচেছে তারা। যদিও ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলি উল্টো পথে হেঁটে আরও বড় পতন আটকেছে কিছুটা।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ এই পতনকে বাজারে সংশোধনের অঙ্গ বলে ব্যাখ্যা করলেও, অন্য অংশ বলছেন, চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার প্রতিফলন। বিশেষত সীমান্ত নিয়ে চিনের সঙ্গে ভারতের বিবাদে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির শেয়ার বেচার কারণও এটিই। যে কারণে আগামী দিনে বাজারের গতিপ্রকৃতি নিয়ে নিশ্চিত নন কেউ।