আমেরিকায় চিংড়ি, পমফ্রেট-সহ বিভিন্ন মাছ রফতানির জন্য এত দিন রফতানিকারীদের ভর্তুকি দিয়ে এসেছে কেন্দ্র। যার বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) মামলা করেছিল ওয়াশিংটন। দাবি ছিল, ভারতের ভর্তুকির জেরে বাজার হারাচ্ছে মার্কিন সংস্থাগুলি। সূত্রের খবর, সম্প্রতি এ নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে নির্দেশ জারি করেছে ডব্লিউটিও। এই অবস্থায় ভর্তুকির বিষয়টি নিয়ে সারা দেশেই তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। আশঙ্কা তৈরি হয়েছে রাজ্যের মাছ রফতানি শিল্পেও। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিশ্ব বাজারে বছরে যা মাছ রফতানি হয়, তার বড় বাজার আমেরিকা। পাশাপাশি এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন রাজ্যের কয়েক হাজার চিংড়ি চাষিও।
বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীন সামুদ্রিক পণ্য রফতানি উন্নয়ন পর্ষদের খবর, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রফতানিকারীদের ভর্তুকি দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র। কিন্তু তার পরেও তা দেওয়া হবে কি না বা দিলেও কত, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আপাতত মন্ত্রকের মধ্যে কথা চলছে। পর্ষদের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার ডেপুটি ডিরেক্টর অর্চিমান লাহিড়ি জানান, সম্প্রতি রাজ্যের মাছ রফতানিকারীদের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়েছে। ভর্তুকি নিয়ে সংস্থাগুলি যে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে, তা মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাদের জানানো হয়েছে।
রাজ্যের রফতানি •২০১৬-১৭ ৪৪৫৯ •২০১৭-১৮ ৪৯০৯ •২০১৮-১৯ ৫৩২২ হিসেব কোটি টাকায়
মাছ রফতানিতে কেন্দ্র ৬%-৮% ভর্তুকি দেয়। যার মূল লক্ষ্য ইউরোপ-আমেরিকায় রফতানি বাড়ানো। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আমেরিকায় বাগদা-সহ নানা জাতের চিংড়ি, পমফ্রেট ও শুঁটকি মাছ যায়। রফতানিকারী সংস্থা প্রায় ২০০। মার্কিন বাজারে রাজ্যের যে চিংড়ি যায়, তার বেশিরভাগটাই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন ভেড়িতে চাষ হয়। গত বছর ভেড়ির চিংড়ি রফতানি হয়েছে ৪৮,০০০ টন। সমুদ্র থেকে ধরা চিংড়ি-সহ অন্যান্য মাছ ১৫,০০০ টন।
কেন্দ্রের ভর্তুকি কারণেই অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিতে পারে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশের রফতানিকারীরা। অনেক সময়ে রফতানির লক্ষ্যে চাষিদের চিংড়ির আগাম বরাতও দেওয়া হয়। এখন ভর্তুকি নিয়ে সিদ্ধান্ত না-হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে মাছ রফতানির ক্ষেত্রে। তবে সূত্রের খবর, ডব্লিউটিওর নির্দেশের বিরুদ্ধে আপিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। শেষ পর্যন্ত কী হয়, সে দিকেই এখন চোখ মাছ ব্যবসায়ীদের।