চলতি অর্থবর্ষে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ঘাটতিকে ৩.৩ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখার লক্ষ্য স্থির করেছিলেন।
আশঙ্কার কথা আগেই শুনিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। এ বার ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করার জন্য রাজকোষ ঘাটতির হিসেব করতে গিয়ে মুশকিলে পড়েছে অর্থ মন্ত্রকও। চলতি অর্থবর্ষে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ঘাটতিকে ৩.৩ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখার লক্ষ্য স্থির করেছিলেন। কিন্তু খোদ সরকারের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, তা ছোঁয়া যাবে তো? এর আগেও একাধিকবার জেটলি রাজকোষ ঘাটতিকে গণ্ডির মধ্যে বেঁধে রাখতে না পেরে, নতুন গণ্ডি এঁকেছেন। আবার নিজের সেই বাঁধা গণ্ডি ভেঙেছেন। এ বারও সেই সম্ভাবনাই বেশি বলে অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর। তোপ দাগছেন বিরোধীরাও। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বমরমের কটাক্ষ, আয়কর ও জিএসটি, দু’ক্ষেত্রেই আয় আশানুরূপ আয় না হওয়ায় এ বছরও ঘাটতি লক্ষ্যেমাত্রায় বেঁধে রাখা যাবে না বলে তাঁদের আশঙ্কা।
বস্তুত, ভোটের মুখে ক্ষুব্ধ চাষি বা নোটবন্দি ও জিএসটিতে ধাক্কা খাওয়া ছোট মাঝারি শিল্পের মন জিততে দিতে হবে আর্থিক সুবিধা। আয়করের বোঝা কমানোর কথা ভাবতে হবে মধ্যবিত্তকে কাছে টানতেও। সরকারি সূত্র বলছে, যদিও বেশির ভাগই হবে নতুন অর্থবর্ষে, নতুন সরকারের আমলে। কিন্তু ভোটের আগে এ বছর খরচে কাটছাঁট চলবে না। ঘাটতি বাড়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও। আবার ১ ফেব্রুয়ারির ভোট অন অ্যাকাউন্টে খরচ ও আয়ের মধ্যে ফারাক বেশি বাড়তে দিলে চলবে না। আর চাপ বাড়ছে এতেই।
তবে অর্থ মন্ত্রকের সূত্র বলছে, জিএসটি থেকে কেন্দ্রের আয় কম হয়েছে ঠিকই, তবে এই ঘাটতি জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ তহবিল থেকে মেটানো হবে। রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি কেন্দ্রের মিটিয়ে দেওয়ার কথা জিএসটি-র উপরে বসা সেস থেকে। গত বছর অর্থ মন্ত্রক আইনে সংশোধন এনে ওই টাকা কেন্দ্রের প্রয়োজনেও কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করেছিল।
বাজেটের অনুমান ছিল, এই অর্থবর্ষে ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যগুলিকে ৯০ হাজার কোটি মেটাতে হবে। এখন রাজস্ব দফতরের কর্তাদের হিসেব, ৬০ হাজার কোটিতেই তা মিটবে। যেখানে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরে সেস থেকে আয় হয়েছে ৭১ হাজার কোটি টাকার বেশি। ফলে তার অন্তত ২৫ হাজার কোটি জেটলি কাজে লাগাতে পারেন। আবার বিলগ্নিকরণ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা তোলার লক্ষ্য পূরণ না হলেও, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে তাদের শেয়ার ফিরিয়ে কিছু টাকা ঘরে তোলার চেষ্টা হচ্ছে বলেও দাবি করছে একাংশ।