ধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে রাখতে তৈরি কম দামের আবাসনগুলির (৪০ লক্ষ টাকার কম) চাহিদা কিছুটা কমেছে। ফাইল ছবি
মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল মানুষ। অনেকের মাথার উপরে ছাদ জোগাড়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে গৃহঋণের চড়া সুদ। তার উপরে কাঁচামালের দর বাড়ায় ফ্ল্যাট-বাড়ির দামও বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, এতে মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে রাখতে তৈরি কম দামের আবাসনগুলির (৪০ লক্ষ টাকার কম) চাহিদা কিছুটা কমেছে। অথচ দামি ফ্ল্যাট-বাড়ির ব্যবসায় কার্যত জোয়ার। এ বছর সেগুলির বিক্রি ছাপিয়েছে গত তিন বছরকে। উপদেষ্টা অ্যানারক জানাচ্ছে, বড় সাতটি শহরে ২০১৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত প্রতি বছরে ১.৫ কোটি টাকার বেশি দামের যতগুলি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছিল, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুনেই তা পেরিয়ে গিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, আর্থিক বৈষম্য বৃদ্ধিরই প্রতিফলন এই ছবি। কোভিডে অনেকে চিকিৎসার খরচ বইতে গিয়ে কাহিল হয়েছেন। সেই ধাক্কা কাটতে না কাটতেই জ্বালানি থেকে প্রায় সমস্ত জিনিসের দাম এমন চড়েছে যে, মধ্যবিত্ত মানুষের সংসার খরচ কার্যত বেলাগাম। অনেকের হাতে বাড়তি পুঁজি থাকছে না। যাঁরা সঞ্চয় করছেন, তাঁদের অনেকেও কিস্তির চড়া খরচ দেখে এগোতে সাহস পাচ্ছেন না। উল্টো দিকে, এক শ্রেণির হাতে বিপুল অর্থ। সম্প্রতি উপদেষ্টা নাইটফ্র্যাঙ্কও বলেছিল, চড়া সুদ এবং দাম বৃদ্ধির জেরে ফ্ল্যাট-বাড়ির ক্রয়ক্ষমতা সূচক কমেছে আটটি বড় শহরে।
সোমবার অ্যানারকের দাবি, কম দামি ফ্ল্যাটের চাহিদা পুরো ২০১৯ সালে যেখানে মোট বিক্রির ৩৮% ছিল, সেখানে গত জানুয়ারি-জুনে তা কমে হয়েছে ৩১%। অথচ জানুয়ারি-জুনে কলকাতা-সহ সাতটি বড় শহরে বিক্রীত ১.৮৪ লক্ষ ইউনিটের মধ্যে দামি ফ্ল্যাটের অনুপাত ছুঁয়েছে ১৪%। যা ২০১৯-এ ছিল ৭%। অ্যানারকের চেয়ারম্যান অনুজ পুরীর মতে, করোনার মধ্যেও এক শ্রেণির উচ্চবিত্ত মানুষের হাতে শেয়ার বাজার থেকে বিপুল টাকা এসেছে, যা তাঁরা ঢালছেন ফ্ল্যাটে। বাড়ি থেকে কাজ করতে ফ্ল্যাটে বাড়তি জায়গার খোঁজও চাহিদার কারণ। তা ছাড়া, বহু দামি আবাসনের কাজ শেষ হয়েছে। উপরন্তু টাকার দামের পতনের সুযোগে বহু অনাবাসী ভারতীয় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনছেন।