নির্মলা সীতারামন। ফাইল চিত্র।
সংবিধান সংশোধন করে কেন্দ্র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, জিএসটি থেকে রাজ্যগুলির পর্যাপ্ত আয় না হলে সেই ক্ষতি পূরণ করে দেওয়া হবে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের আশঙ্কা, অর্থনীতির ঝিমুনির ঠেলায় এই প্রথম প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হতে পারে মোদী সরকার।
জিএসটির আওতায় বিলাসবহুল ও ক্ষতিকারক পণ্যে বাড়তি সেস বসিয়ে কেন্দ্রের যে আয় হয়, তা থেকেই রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। কিন্তু অর্থনীতির ঝিমুনির ফলে বাজারে কেনাকাটা কমেছে। যে কারণে জিএসটি বাবদ আয় কমেছে কেন্দ্র ও রাজ্যের। কমে গিয়েছে সেস বাবদ আয়ও। অর্থ মন্ত্রকের অনুমান, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের শেষে জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যগুলিকে প্রায় ১.৬০ লক্ষ কোটি টাকা দিতে হবে। কিন্তু সেস বাবদ আয় হবে ৯৭,০০০ কোটি। বছরের শুরুতে সেস তহবিলে ৪৮,০০০ কোটি ছিল। ফলে কেন্দ্রের মোট আয় দাঁড়াবে ১.৪৫ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এর পরেও ১৫,০০০ কোটি টাকার ঘাটতি থেকে যাবে।
জিএসটি চালুর সময় ঠিক হয়, ২০১৫-১৬ সালের ভিত্তিতে প্রতি বছর ১৪% হারে রাজ্যগুলির রাজস্ব আয় বাড়বে। না-হলে সেই ঘাটতি মিটিয়ে দেবে কেন্দ্র। মন্ত্রকের কর্তাদের আশঙ্কা, বাজারে চাহিদার যা অবস্থা, তাতে কোনও রাজ্যেরই ওই হারে রাজস্ব আদায় বাড়বে না। ফলে ক্ষতিপূরণের দায়ও অনেক বেশি হবে কেন্দ্রের।
অনুমান
• রাজ্যগুলিকে চলতি অর্থবর্ষে দিতে হতে পারে ১.৬০ লক্ষ কোটি টাকা।
• সেস থেকে আয় হতে পারে ৯৭,০০০ কোটি।
• অর্থবর্ষের শুরুতে সেস তহবিলে ছিল ৪৮,০০০ কোটি টাকা।
• সব মিলিয়ে আয় দাঁড়াতে পারে ১.৪৫ লক্ষ কোটি।
• বছর শেষে ঘাটতি পড়তে পারে ১৫,০০০ কোটি।
প্রসঙ্গত, অগস্ট থেকে জিএসটির ক্ষতিপূরণ মিলছিল না বলে সরব হয়েছিল রাজ্যগুলি। চলতি মাসে জিএসটি পরিষদের বৈঠকের আগে কেন্দ্র অগস্ট-সেপ্টেম্বরের ক্ষতিপূরণ দিলেও, এখনও অক্টোবর-নভেম্বরের ক্ষতিপূরণ দেওয়া বাকি। যা নিয়ে
বিরোধী রাজ্যগুলির সঙ্গে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিও সরব হয়েছে। কর্নাটকের বিজেপি সরকারের দাবি, তাদের প্রায় ৩,৫০০ কোটি বকেয়া।
জিএসটি থেকে আয় কমার পিছনে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা কর ফাঁকি ও বিল জাল করে কর ছাড় নেওয়ার দিকে আঙুল তুলেছিলেন। আজ বিহারের অর্থমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদী বলেন, জিএসটি ব্যবস্থায় ৬৬.৭৯ লক্ষ নতুন নথিভুক্ত করদাতা সংস্থার তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। এগুলি জাল বা ভুয়ো সংস্থাও হতে পারে। কারণ এতগুলি সংস্থা মোট আদায়ের মাত্র ১৫% রাজস্ব জমা করছে। জিএসটি চালু হওয়ার পরে ওই ৬৬.৭৯ লক্ষ সংস্থা যোগ হওয়ায় মোট করদাতা সংস্থার সংখ্যার ১.২১ কোটিতে পৌঁছেছে।