আলোচনা: বৈঠকে বক্তব্য পেশ এন চন্দ্রবাবু নায়ডুর (বাঁ দিকে)। রয়েছেন অমিত মিত্রও (ডান দিকে)। সোমবার অমরাবতীতে। নিজস্ব চিত্র
রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে পঞ্চদশ কমিশনের প্রস্তাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিল দক্ষিণী রাজ্যগুলি। যাতে যোগ দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গও। সোমবার অমরাবতীর বৈঠকে প্রতিবাদী রাজ্যগুলির সেই অসন্তোষই আরও দানা বাঁধল। প্রশ্ন তোলা হল, তা হলে কি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সফল হওয়ার খেসারতই এ বার গুনতে হবে তাদের? এই কারণে কপালে জুটবে কম রাজস্বের ভাগ?
এ দিন কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের মতো বিক্ষুব্ধ রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও সচিবদের নিয়ে বৈঠক বসেছিল। সেখানেই রাজ্যগুলির দাবি, রাজস্ব ভাগ নিয়ে কমিশনের আনা বিভিন্ন প্রস্তাবে সঙ্কটের মুখে তাদের আর্থিক স্বাধীনতা। বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপিও জমা দেবে তারা।
বৈঠকে উপস্থিত অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নায়ডু বলেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এই সব রাজ্য সফল হয়েছে। ফলে ২০১১ সালের জনগণনার হিসেব ধরে রাজস্ব ভাগ হলে তারা বঞ্চিত হবে। বৈঠকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের গলাতেও ছিল একই সুর। তাঁর অভিযোগ, কমিশনের প্রস্তাব মৌলিক সাংবিধানিক মূল্যবোধের বিরোধী। এমনিতেই রাজ্যগুলির রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে। কেন্দ্র ঠিক মতো অর্থ বণ্টন করছে না। পশ্চিমবঙ্গের পাওনা প্রায় ৯,৯৫৮ কোটি টাকা এখনও মেলেনি। বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকারকে ধার পর্যন্ত করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় এমন প্রস্তাব মানা যায় না।
কমিশনের প্রস্তাব ছিল, ২০১১ সালের জনসুমারি অনুসারে রাজস্ব ভাগ হোক রাজ্যগুলির মধ্যে। বিভিন্ন রাজ্যের অভিযোগ, এর ফলে যারা জন্ম নিয়ন্ত্রণে সফল, তাদের ভাগে পড়বে কম। আর যে সব রাজ্য তা করতে পারেনি, তাদের জুটবে বেশি। আর এই বেশির তালিকায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত বিভিন্ন উত্তর ভারতীয় রাজ্য।
যদিও কেন্দ্রের দাবি, এই প্রস্তাবে কোনও রাজ্য বঞ্চিত হবে না। দক্ষিণের রাজ্যগুলিকে বঞ্চনার যে অভিযোগ উঠছে, তা-ও উড়িয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এখন কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধের জল কোন দিকে গড়ায়, সে দিকেই তাকিয়ে সকলে।