কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের দাবি, মূল্যবৃদ্ধি অনেকটাই আয়ত্তে চলে এসেছে। ফাইল চিত্র।
কৃষি, নির্মাণ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রমিকদের মজুরি এবং জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির মধ্যে তুলনা টেনে মোদী সরকারকে বিঁধলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের অবশ্য দাবি, মূল্যবৃদ্ধি অনেকটাই আয়ত্তে চলে এসেছে। তাকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার জন্য তৃণমূল স্তরে নজরদারি চালাচ্ছে কেন্দ্র। একই দিনে দেশের আর্থিক কর্মকাণ্ডের গতি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
সোমবার টুইটারে অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ়ের এক বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন উল্লেখ করে রমেশের বক্তব্য, কয়েক দিনের মধ্যেই কেন্দ্রের নেতা-মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানার তথাকথিত কৃতিত্ব সম্পর্কে প্রচার শুরু করবেন। কিন্তু দরিদ্রসীমার নীচে থাকা ও জীবনধারনের সাধারণ চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে জেরবার মানুষেরা প্রশ্ন তুলবেন, ‘‘আমাদের জীবন ও জীবিকার কি উন্নতি হয়েছে?’’ উত্তর হল, ‘‘না।’’ রমেশের আরও দাবি, ২০১৪ সাল থেকে কৃষি ক্ষেত্রের প্রকৃত মজুরি বৃদ্ধির হার ০.৮%। কৃষি ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে তা ০.২%। নির্মাণ ক্ষেত্রের প্রকৃত মজুরি আদতে ০.০২% সঙ্কুচিত হয়েছে। অথচ গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের দাম গত ন’বছরে মাথা তুলেছে ১৬৯%। পেট্রল ও ডিজ়েলের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৫৭% এবং ৭৮%। সর্ষের তেল, আটা এবং দুধের দাম বেড়েছে ৫৮%, ৫৬% এবং ৫১% করে। কংগ্রেস নেতার তোপ, ‘‘সমস্ত ক্ষেত্রের আয়ই স্থির। অবশ্য বিশেষ এক জনকে বাদ দিয়ে। গৌতম আদানির সম্পদ বেড়েছে ১২২৫%।’’
এ দিন মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে নির্মলা অবশ্য কংগ্রেসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্র বদ্ধপরিকর। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধির পরিস্থিতি ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করে চলেছে কেন্দ্র। আমরা তৃণমূল স্তরে সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখছি। মূল্যবৃদ্ধি ইতিমধ্যেই নাগালের মধ্যে আসতে শুরু করেছে।’’ উল্লেখ্য, দেশের খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার মার্চের ৫.৬৬% কমে এপ্রিলে হয়েছে ৪.৭%। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক একে ৪ শতাংশের কাছে নামাতে চাইছে। দীর্ঘ দিন বাদে এপ্রিলের ঋণনীতিতে সুদ বৃদ্ধি স্থগিত রেখেছে তারা। শিল্প-সহ বিভিন্ন মহলের আশা, জুনের ঋণনীতি আরও কিছুটা সহায়ক হতে পারে।
অন্য দিকে, অর্থনীতির অগ্রগতির প্রশ্নে মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছেন চিদম্বরম। তাঁর বক্তব্য, ২০০৪ থেকে ২০০৯ সালে অর্থনীতি কার্যত দৌড়চ্ছিল। এখন ক্রমাগত তা গতি হারাচ্ছে। বাড়ছে বেকারত্ব, জিনিসপত্রের দাম, বৈষম্য। কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি হোঁচট খাচ্ছে। নির্মলা অবশ্য এই অভিযোগের সরাসরি কোনও উত্তর দেননি। তাঁর বক্তব্য, ১০ বছরের ইউপিএ শাসনে চিদম্বরম অনেকটা সময়েই অর্থমন্ত্রী ছিলেন। দু’টি সময়ের তুলনা করে দেখলে সব কিছু পরিষ্কার বোঝা যাবে।