কৃষির সঙ্কটে চোখরাঙানি খরার

লোকসভা ভোটের ফল সামনে আসার পরে কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলেও, এ দিন নীতি আয়োগের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সামনে কৃষির সমস্যা এবং সারা দেশে খরার ভ্রুকুটির প্রশ্নে সরব হলেন অ-বিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৯ ০২:৪১
Share:

ফুটিফাটা: খরায় শুকিয়ে গিয়েছে হ্রদও। চেন্নাইয়ের কাছে। এএফপি

আগামী ২০২২ সালের মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার স্বপ্ন বছর খানেক ধরেই ফেরি করছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কিন্তু পরিসংখ্যান দেখিয়েছে, বাস্তবের ছবি ঠিক ততটাই বিবর্ণ। জলের দরে বেচতে বাধ্য হওয়ায় পণ্যের ঠিক দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। দেনার দায়ে আত্মহত্যার পথ পর্যন্ত বেছে নিয়েছেন অনেকে। দিল্লি আর মুম্বই সাক্ষী থেকেছে চাষিদের লং মার্চের। এর উপর আবার এখন চোখ রাঙাচ্ছে খরার আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে সেই খরার আশঙ্কা ও চাষিদের দুর্দশা নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর সামনে সরব হলেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা।

Advertisement

লোকসভা ভোটের ফল সামনে আসার পরে কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলেও, এ দিন নীতি আয়োগের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সামনে কৃষির সমস্যা এবং সারা দেশে খরার ভ্রুকুটির প্রশ্নে সরব হলেন অ-বিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, সরকার কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার কথা বলেছে ঠিকই। কিন্তু সেই আয় বাড়া তো দূরস্থান, কৃষি থেকে বরং সরে যাচ্ছেন চাষিরা। আলোচনার পরে নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের অবশ্য দাবি, কৃষিতে যে সমস্যা রয়েছে, সরকার তা জানে। সে কারণেই একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। তা থেকে সন্ধান মিলবে কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও বিপণন বাড়িয়ে আয় বৃদ্ধির।

খরা প্রসঙ্গে বৈঠকে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ বলেন, তাঁর রাজ্য কৃষকদের বিশেষ বীজ দিচ্ছে। যাতে দেরিতে আসা বর্ষার ফলে তৈরি হওয়া সঙ্কট সামলানো যায়। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় তাঁর রাজ্য যে জেলা ভিত্তিক পরিকল্পনা নিয়েছে, তা-ও জানান তিনি। বর্ষার জল ধরে রাখা নিয়ে সরব হয় মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলি।

Advertisement

রাজীব কুমারও মানছেন, ‘‘পাঁচ বছর ধরে স্বাভাবিক বর্ষা হয়নি। এ বারও ঘাটতির পূর্বাভাস রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সমস্ত রাজ্যকে একসঙ্গে এগোতে হবে।’’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও। জার্মানি যাওয়ায় আসেননি হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী। শরীর খারাপের জন্য অনুপস্থিত ছিলেন পঞ্জাবের অমরেন্দ্র সিংহও। মমতা আগেই জানিয়েছিলেন, নীতি আয়োগের আর্থিক ক্ষমতা নেই। তাই তিনি আসবেন না। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কুমার বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। আশা করেছিলাম মমতা আসবেন। উনি না আসায় খেদ থেকে গেল।’’ পঞ্জাব এবং হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রীদের অনুপস্থিতিতে এসেছিলেন মুখ্যসচিবরা।

এ দিন আলোচনায় বসার আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন কংগ্রেস এবং তার জোটসঙ্গী দলের মুখ্যমন্ত্রীরা। সূত্রের খবর, মনমোহন সিংহের কথা মেনেই দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়েও বৈঠকে সরব হন বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement