—প্রতীকী চিত্র।
দোকান-বাজারে জিনিসপত্র বিশেষত খাদ্যপণ্যের চড়তে থাকা দামে মূল্যবৃদ্ধি মাথাচাড়া দেওয়ার চিন্তা বাড়ছিল গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই। সেই আশঙ্কা মিলিয়ে জুনে দেশে খুচরো বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধির হার পৌঁছে গেল ৪.৮১ শতাংশে। যা তিন মাসে সর্বাধিক। এর আগে মে মাসে দেশে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৪.৩১% (সংশোধিত)। আর গত বছরের জুনে ৭%। পরিস্থিতি দেখে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, মূল্যবৃদ্ধির হার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় গত দু’টি ঋণনীতিতে সুদের হার স্থির রেখেছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। মনে করা হচ্ছিল দাম নামলে তা কমাতেও পারে তারা। কিন্তু এই হার ফের মাথা তোলায় সুদ কমার সম্ভবনা তো আর থাকলই না। বরং দর এ ভাবে বাড়লে পরবর্তী ঋণনীতিতে না ফের সুদ বৃদ্ধির পথে হাঁটে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক।
দেশের বাজারে ইতিমধ্যেই আনাজের দাম চলে গিয়েছে বহু সাধারণ রেজগেরের সাধ্যের বাইরে। কলকাতার বাজারে এক কেজি লঙ্কার দাম এখন ২৫০-৩০০ টাকা। টোম্যাটো ঘুরছে ১৫০ টাকার আশেপাশে। এক কেজি আদা ৩২০-৩৬০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, পেঁয়াজ কিছু দিন আগে স্বাভাবিক দরে বিকোচ্ছিল। এখন তা-ও উর্ধ্বমুখী। সম্প্রতি অর্থনীতিবিদদের নিয়ে করা রয়টার্সের এক সমীক্ষা জানিয়েছিল, দামের এই গতি বহাল থাকলে তা খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে ৬ শতাংশের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
এ দিনের তথ্যে অর্থনীতিবিদদের সেই আশঙ্কাই আরও স্পষ্ট হল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষত যেখানে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির প্রায় অর্ধেক জুড়ে থাকে খাদ্যপণ্য। বুধবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় হিসাব করলে এ বছর জুনে ভোজ্যতেল (-১৮.১২%) এবং আনাজের (-০.৯৩%) দাম কমেছে ঠিকই। কিন্তু তা অনেকটা বেড়েছে মে মাসের চেয়ে হিসাব করলে। আবার ২০২২ সালের জুনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে দর বেড়েছে ডিম (৭%), খাদ্যশস্য (১২.৭১%), মশলা (১৯.১৯%), ডাল (১০.৫৩%) ইত্যাদির। সব মিলিয়ে জুনে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪.৪৯%। মে মাসে তা ছিল ২.৯৬%।
অবস্থা যে বেগতিক, সেটা বুঝছে মোদী সরকারও। বুধবারই তারা কলকাতা, দিল্লি-সহ বহু শহরে কম দামে টোম্যাটো বিক্রির কথা জানিয়েছে। সম্প্রতি বিজেপি প্রেসিডেন্ট জে পি নড্ডা বলেছিলেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে ৪.২৫% হার নিয়ে ভারত সব থেকে নীচে। যাঁরা খাদ্যপণ্য নিয়ে কথা বলছেন, তাঁরা তেমন লেখাপড়া করেন না। খুব বেশি খবরও রাখেন না তাঁরা।’’