—প্রতীকী ছবি।
চাহিদা কমার ধাক্কা বহু দিন ধরেই টের পাচ্ছিল তারা। আশঙ্কা মিলিয়ে ৩১ মার্চে শেষ হওয়া গত অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকেও মুনাফা বিপুল কমল ভারতে কেএফসি, পিজ়া হাট, ম্যাকডোনাল্ডস-এর মতো চটজলদি খাবার বিক্রেতাদের। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, অত্যাবশ্যক খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে বহু ক্রেতা খরচে রাশ টানছেন, যার একাংশ সেগুলির জন্য বরাদ্দ ছিল।
কেএফসি ইন্ডিয়া এবং পিজ়া হাট রেস্তরাঁ চেন-এর ব্যবসা পরিচালনাকারী দেবযানী ইন্টারন্যাশনাল মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত জানুয়ারি-মার্চে তাদের মুনাফা ৮৯% কমেছে। ব্যতিক্রমী কিছু খাবার বাদে এবং কর মেটানোর আগে সামগ্রিক লাভ দাঁড়িয়েছে ৪.৩৯ কোটি টাকা। এক বছর আগে ওই সময় মুনাফা হয়েছিল ৪১.২৩ কোটি। তারা কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ায় দৈনন্দিন ব্যবসা থেকে আয় প্রায় ৩৯% বেড়েছে বটে। তবে খরচ ৪৬% চড়েছে।
এর আগে এ দেশে পিজ়া হাট এবং কেএফসি-র রেস্তরাঁ চেন-এর আর এক পরিচালক স্যাফায়ার ফুডস ইন্ডিয়ার সামগ্রিক নিট মুনাফাও ৯৮% কমেছে। টানা চারটি ত্রৈমাসিক ধরে লাভে কোপ পড়েছে তাদের। ম্যাকডোনাল্ডস ইন্ডিয়ার-র পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। চাহিদার ঘাটতিতে তাদের অন্যতম ফ্ল্যাঞ্চাইজ়ি ওয়েস্টলাইফের নিট মুনাফা ৯৬% মুছে গিয়েছে।
বিশ্লেষকদের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে মানুষের খরচ বেড়েছে। বাজারে আনাজ-সহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীর দাম এখনও চড়া। ফলে অনেকের হাতেই বাড়তি টাকা থাকছে না। যাঁদের সামান্য থাকছে, তাঁরাও তা খরচ না করে সঞ্চয় করছেন। এই প্রক্রিয়ায় কাটছাঁট হচ্ছে পিৎজ়া-বার্গারের মতো খাবারের অর্ডার দেওয়া এবং বাইরে খাওয়ার প্রবণতা। যার প্রভাবে চটজলদি খাবারের (কুইক সার্ভিস) রেস্তরাঁগুলির মুনাফা যাচ্ছে তলিয়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্যাফায়ার ফুডসও কম দামি খাবার এনেছিল। আকর্ষণীয় করে তুলেছিল পুরনোগুলিকে। কিন্তু লাভ হয়নি। সেগুলি তৈরির উপাদানের দাম ৯.৪% বেড়ে যাওয়ায় খরচ চড়েছে ১৫%। অথচ আয় বেড়েছে ১২.৭%।
বহু বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ক্রেতাদের একাংশ চটজলদি খাবার কেনা কমিয়েছেন। তাই কম দামের সুবিধাও কাজে দিচ্ছে না। তার উপর সস্তার খোঁজে অনেকে স্থানীয় ছোট দোকানে ভিড় করছেন। লা পিনোজ়, জাম্বোকিং, বিগিস বার্গারের মতো স্থানীয় রেস্তরাঁ চেনগুলির প্রতিযোগিতাও বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে চাপ বাড়ছে পিজ়া হাট, ডমিনো’জ়, বার্গার কিং-এর মতো খাবারের চেনগুলির। সমীক্ষা আগেই বলেছিল, জানুয়ারি-মার্চে স্যাফায়ার, দেবযানী এবং ওয়েস্টলাইফের মুনাফা কমতে পারে ৫৪%-৯৭%। টানা ১২টি ত্রৈমাসিকে ক্ষতি গুনতে পারে রেস্তরাঁ ব্র্যান্ডস এশিয়া। পিজ়া হাটের একই বিপণিতে বিক্রি মাথা নামাতে পারে ১০%। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।