এফসিআই এবং রাজ্য সরকারের সংস্থাগুলি মিলে প্রতি বছর চাষিদের থেকে প্রায় ৯ কোটি টন খাদ্যশস্য কেনে। ফাইল ছবি
এতদিন খাদ্য নিগম (এফসিআই) এবং রাজ্য সরকারের সংস্থাগুলিই চাষিদের থেকে ধান-গমের মতো খাদ্যশস্য কিনে নিত। এ বার মোদী সরকার এই কাজে বেসরকারি সংস্থাকেও দায়িত্ব দিতে চাইছে। কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিব সুধাংশু পাণ্ডে এই কথা ঘোষণার পরেই বিরোধীদের অভিযোগ, তিনটি কৃষি আইন ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়ে মোদী সরকার এখন পিছনের দরজা দিয়ে কৃষি ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাকে ঢোকাতে চাইছে।
এফসিআই এবং রাজ্য সরকারের সংস্থাগুলি মিলে প্রতি বছর চাষিদের থেকে প্রায় ৯ কোটি টন খাদ্যশস্য কেনে। খাদ্য সুরক্ষা আইন, রেশন ব্যবস্থায় দরকার হয় প্রায় ৬ কোটি টন শস্য। এ বার খাদ্য মন্ত্রক চাষিদের থেকে তা কেনার কাজে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে আমন্ত্রণ জানাতে চলেছে। ইতিমধ্যেই সমস্ত রাজ্যকে এ বিষয়ে চিঠি লিখে জানানো হয়েছে। মোদী সরকারের মতে, এতে খাদ্যশস্য কেনার খরচ কমবে। কারণ দক্ষতা আসবে কাজে।
কেন্দ্র যে তিনটি কৃষি আইন এনেছিল, তাতেও বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সরাসরি চুক্তি চাষ করিয়ে চাষিদের থেকে ফসল কেনার অধিকার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এক বছর ধরে কৃষকদের আন্দোলনের পরে সরকার আইন তিনটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, এ বার পিছনের দরজা দিয়ে বেসরকারি সংস্থাকে আনা হচ্ছে। কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, ‘‘তিন কালো আইন ফিরিয়ে নেওয়ার পরে মোদী সরকার এ বার ঘুরপথে বেসরকারি সংস্থার হাতে কৃষির নিয়ন্ত্রণ তুলে দিতে চাইছে। সবাই জানে নরেন্দ্র মোদীর কোন প্রিয় শিল্পপতি বন্ধুর এতে সরাসরি ফায়দা হবে।’’
খাদ্য মন্ত্রকের অবস্থান হল, ফসল কিনতে গিয়ে যে পরিমাণ টাকা খরচ হওয়ার কথা, দক্ষতার অভাবে অনেক রাজ্যেই তার তুলনায় বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার মাত্র ২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি বহন করবে। অনেক রাজ্যই কর বসানোর ফলে ৬ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি খরচ হয়। দক্ষতার অভাবেও টাকা লাগে বেশি। কিন্তু হয় রাজ্যকে খরচ কমাতে হবে, না হলে নিজের পকেট থেকে খরচ করতে হবে। বিরোধীদের অভিযোগ, বেসরকারি সংস্থাকে কৃষি ক্ষেত্রে প্রবেশের অধিকার দিতেই রাজ্যের উপরে এভাবে চাপ তৈরি করা হচ্ছে। যাতে বেসরকারি সংস্থা এলে খরচ কমবে ভেবে রাজ্য সরকারগুলি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়।