প্রতীকী ছবি।
গাড়ি-বাড়ির ঋণে তিন মাস ইএমআই শোধ না-করলে প্রাথমিক ভাবে হাতে টাকা বাঁচবে ঠিকই, কিন্তু উল্টে গুনতে হবে বাড়তি সুদ। স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বুধবার ইএমআই মেটানোর সময়সীমা তিন মাস পিছোনোর (মোরাটোরিয়াম) নিয়ম খোলসা করেছে। তার পরেই প্রশ্ন উঠছে, করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের ফলে রোজগার কমে যাওয়া মানুষের জন্য অর্থ মন্ত্রক ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আদৌ সুরাহার বন্দোবস্ত করেছে, নাকি তাঁদের উপরে বাড়তি বোঝা চাপাচ্ছে?
অর্থ মন্ত্রকের অনুরোধে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নির্দেশিকা জারি করে বলেছিল, তিন মাসের জন্য সব মেয়াদি ঋণের কিস্তি স্থগিত রাখা হবে। মার্চ, এপ্রিল ও মে-র ইএমআই কাটা হবে না। ফের জুনের শেষে বা জুলাইয়ের শুরুতে তা কাটা হবে। কিন্তু তিন মাস ঠিক সময়ে ইএমআই না-মেটানোর জন্য সুদ গুনে যেতে হবে। আজ স্টেট ব্যাঙ্ক বুঝিয়েছে, সেই অঙ্কটা যথেষ্টই বেশি।
কিছু ব্যাঙ্ক অবশ্য গ্রাহকদের জানিয়েছে, তাঁরা চাইলে রুটিন মাফিক ইএমআই শোধ করতে পারেন। ব্যাঙ্ককর্তারা বলছেন, চাকুরিজীবীদের মতো যাঁদের লকডাউনের জেরে বেতন বন্ধ হয়নি, তাঁদের স্থগিতাদেশের সুযোগ না-নেওয়াই ভাল। কারণ, তাতে বাড়তি সুদের বোঝা চাপবে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সংগঠন আইবিএ-ও জানিয়েছে, ১২% সুদে ১ লক্ষ টাকা ঋণ নিলে তিন মাস ইএমআই না-দিলে তার পরে বাড়তি ৩০৩০.১০ টাকা সুদ মেটাতে হবে।
এর পরেই কংগ্রেসের প্রশ্ন, মোদী সরকার সাধারণ মানুষকে কি সুরাহা দিচ্ছে, নাকি তাঁদের উপরে বাড়তি বোঝা চাপাচ্ছে? এক দিকে স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার কমানো হচ্ছে, আর এক দিকে ইএমআই স্থগিত রাখার নামে বাড়তি সুদ আদায় করা হচ্ছে! কেন সুদ মকুব করা হচ্ছে না? উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই সমস্ত স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সুদের হার কমানো হয়েছে।
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, “পিপিএফ, স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার কমানো অর্থনীতির তত্ত্ব মেনে ঠিক হতে পারে। কিন্তু এখন এটা একেবারেই ভুল সময়। রোজগার নিয়ে সমস্যা, অনিশ্চয়তার মধ্যে মানুষ সঞ্চয়ের সুদের উপরে নির্ভর করেন। সরকারের উচিত ৩০ জুন পর্যন্ত পুরনো হারে সুদ দেওয়া। আমি জানি, কোনও কোনও সময় সরকার বোকা বুদ্ধি শুনে চলে। কিন্তু এই বুদ্ধি কতখানি বোকা, তা দেখে আমি স্তম্ভিত।”