প্রতীকী চিত্র।
জুনে ভাল রকম ধাক্কা খেয়েছে দেশের রফতানি। এক বছর আগের তুলনায় তা সরাসরি ৯.৭১% কমে দাঁড়িয়েছে ২,৫০০ কোটি ডলার। বেড়েছে বাণিজ্য ঘাটতি। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বক্তব্য, ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছে মোদী সরকার। এ জন্য যে রফতানি উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ানো দরকার তা ভালই জানে কেন্দ্র। এই অবস্থায় যদি রফতানি এ ভাবে ধাক্কা খেলে তা শিল্পের ক্ষেত্রে তো বটেই, কেন্দ্রের পক্ষেও অস্বস্তির খবর।
এখানেই শেষ নয়। জুনে আমদানিও কমেছে। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, আমদানির একটা উল্লেখযোগ্য অংশ হল মূলধনী পণ্য। যা অন্য পণ্য তৈরিতে কাজে লাগে। ফলে আমদানিতে ভাটা আদতে শিল্পোৎপাদন কমারই ইঙ্গিত। তার উপরে দেশে চাহিদা কমা তো রয়েছেই। ফলে সব মিলিয়ে পরিস্থিতি উদ্বেগের।
সরকারি সূত্রের বক্তব্য, জুনে বেশি মার খেয়েছে পেট্রোপণ্য, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, গয়না, কাটিং ও পালিশ করা হিরে, দামি পাথর ও বস্ত্রের রফতানি। এর কারণ কী?
রফতানির হাল
জুন মাসে ২,৫০০ কোটি ডলার। কমল আট মাস পরে। ১৫ মাসের সর্বনিম্ন।
কারণ
অর্থনীতির গতি কমার ইঙ্গিত, শুল্ক-যুদ্ধের জেরে বিদেশে কম চাহিদা। তার উপরে মেটানো করের টাকা ফেরতে দেরি। পিএনবি কাণ্ড, এনবিএফসি সমস্যার পরে গয়না-সহ সামগ্রিক ভাবে শিল্পের ঋণ পেতে সমস্যা।
আশঙ্কা
সোনা-সহ কিছু শিল্পে কমতে পারে কাজ। আমেরিকার জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের প্রভাব পড়তে পারে ভবিষ্যতে।
রফতানিকারীরা প্রায় সকলেই এক সুরে বলছেন, রফতানি পণ্যে আগে মেটানো জিএসটির টাকা ফেরত পেতে দেরি হচ্ছে। টান পড়ছে পুঁজিতে। ধাক্কা খাচ্ছে পণ্যের উৎপাদন। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখের বক্তব্য, ‘‘নীরব মোদী কাণ্ডের পর থেকে ব্যাঙ্ক ঋণ পেতেও আমাদের সমস্যা হচ্ছে।’’ আবার ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের বক্তব্য, তাদের রফতানির অঙ্ক কমার প্রধান কারণ বিদেশে ইস্পাতের দাম কমা। যার ফলে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রফতানি করে ভাল দাম মিলছে না। ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাকেশ শাহ বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এমন যে, দেশে পণ্য বিক্রি করতে পারলেই বেশি মুনাফা হচ্ছে।’’
এ ছাড়া জিএসপি-র আওতায় ভারতকে কিছু পণ্য বিনা শুল্কে রফতানির সুবিধা দিত আমেরিকা। তা প্রত্যাহার করেছে ওয়াশিংটন। অনেকে বলছেন, অদূর ভবিষ্যতে এর বিরূপ প্রভাবও পড়তে পারে রফতানিতে।