বিশ্ব বাজারের সঙ্কটে সন্ত্রস্ত রফতানি শিল্পও। প্রতীকী ছবি।
ভারতীয় অর্থনীতির পরিস্থিতি তুলনায় ভাল জানালেও, ঝুঁকির কথা মানল কেন্দ্র। শুক্রবার অর্থ মন্ত্রকের প্রকাশিত নভেম্বরের আর্থিক রিপোর্টে তাই এক দিকে উঠে এল দেশে মূল্যবৃদ্ধির মাথা নামানো, অর্থনীতির জমি পোক্ত হয়ে ওঠা বা পরিষেবা রফতানিতে রমরমার ছবি। অন্য দিকে রইল সতর্কবার্তা, বিশ্ব বাজারের ধাক্কায় আগামী বছর জটিলতা তৈরি হতে পারে ভারতেও। ফলে আন্তর্জাতিক বিষয়গুলিতে নজরদারি চালানো ছাড়া গতি নেই।
বিশ্ব বাজারের সঙ্কটে সন্ত্রস্ত রফতানি শিল্পও। গত অর্থবর্ষে দেশেরবাণিজ্য রেকর্ড (৪২,২০০ কোটি ডলার) গড়েছিল। কিন্তু এ বার লক্ষ্য (৪৭,০০০ কোটি ডলার) ছোঁয়া নিয়েই সংশয় বাড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ,চড়া মূল্যবৃদ্ধি, আমেরিকা ও ইউরোপে সুদ বৃদ্ধির জেরে মন্দার আশঙ্কার সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন করে বিভিন্ন দেশে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধি। ফলে রফতানি শেষে সঙ্কুচিত হবে কি না, বড় হচ্ছে সেই প্রশ্ন। অথচ আমদানি বাড়ায় ঊর্ধ্বমুখী বাণিজ্য ঘাটতি। যা অর্থনীতিকে ফের চাপে ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা একাংশের। যদিও এরই মধ্যে পরিষেবা রফতানি উজ্জ্বল বিন্দু।
ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান অরুণ গারোদিয়া বলেন, “বিশ্ব বাজারে চাহিদা কমছে। বহু দেশেই পণ্য জমে। তাই নতুন বিক্রির সুযোগ কমছে। এটাই রফতানির পথে কাঁটা। গত অর্থবর্ষে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রফতানিও লক্ষ্য ছাড়িয়েছিল। এ বার ১২,৭০০ কোটি ডলার ছোঁবে কি না সন্দেহ।’’
পরিষেবা রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি লগ্নিকারীদের ভারত নিয়েউৎসাহের কথাও তুলে ধরেছে মন্ত্রক।বলেছে, উন্নত প্রযুক্তি, তরুণ প্রজন্মেরদক্ষতা বৃদ্ধি ও আঁটোসাঁটো আর্থিক ব্যবস্থার কথাও। তবে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, জুলাই-সেপ্টেম্বরে বাড়লেও, অক্টোবরে রফতানি কমেছে ১২.১২%।গত মাসে বাড়েনি বললেই চলে। আইএমএফ-ও বলছে, অন্ধকার বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারত উজ্জ্বল বিন্দু। বাইরের ঝড় সামলে এগোচ্ছে। তবে ঝুঁকি থাকছেই। বৃদ্ধির হার কমতে পারে। কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির আশঙ্কার থেকে বেশি ঝিমিয়ে পড়ার আশঙ্কা।
ডব্লিউটিও-র পূর্বাভাস, পরের বছর পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্যে ঝিমুনি চলবে। তার বৃদ্ধি থমকাবে ১ শতাংশে।সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এর ধাক্কা থেকেবাঁচবে না ভারতও। রফতানিকারীদের সংগঠন ফিয়ো-র ডিজি অজয় সহায়ের অবশ্য দাবি, “বিরূপ প্রভাব পড়লেও ভোগান্তি বিরাট আকার নেবে না।’’
আরবিআইয়ের ঋণনীতি কমিটির সদস্য জয়ন্ত আর বর্মার সাবধানবাণী, দেশে বৃদ্ধিও নড়বড়ে। সাহায্য জরুরি। তাঁর প্রশ্ন, জমে থাকা চাহিদা পূরণের পরে কেনাকাটা প্রাণবন্ত থাকবে তো?